আজ- রাত ৩:৩৬, বর্ষাকাল | শুক্রবার | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি |
আজ- শুক্রবার, রাত ৩:৩৬ | ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Banner
Home » Blog » বিবিসির মোদী তথ্যচিত্রের লিঙ্ক ব্লক করার প্রতিবাদ এমপিদের

বিবিসির মোদী তথ্যচিত্রের লিঙ্ক ব্লক করার প্রতিবাদ এমপিদের

০ comment views
Social Share

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির একটি তথ্যচিত্রের লিঙ্ক ভারত সরকার ইউটিউবে ব্লক করতে বলার পরও ভারতের বিরোধী দলীয় নেতানেত্রীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মহুয়া মৈত্র ও ডেরেক ও ব্রায়েন ওই তথ্যচিত্রের ভিডিও লিঙ্ক টুইট করেছেন।

যুক্তরাজ্যে প্রচারিত ওই তথ্যচিত্রে গুজরাটে ২১ বছর আগের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তখনকার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা কী ছিল, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এআইএমআইএম নেতা ও হায়দরাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি টুইটারে লিখেছেন, সরকার বিবিসির তথ্যচিত্র ব্লক করতে পারে, কিন্তু জাতির জনকের হত্যাকারী নাথুরাম গোডসেকে নিয়ে চলচ্চিত্র আটকাতে পারে না।

পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষণ দেয়ার জন্য পরিচিত মহুয়া মৈত্র লেখেন, ‘দুঃখিত, সেন্সরশিপ মেনে নেয়ার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রর প্রতিনিধিত্ব করতে নির্বাচিত হইনি। এই দিলাম লিঙ্ক, যতক্ষণ আছে তার মধ্যে দেখে নিন।’

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সম্রাট ও তার পরিষদের সদস্যরা যে এত নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, সেটাও লজ্জার বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পার্লামেন্টে মহুয়া মৈত্রের সতীর্থ ডেরেক ও ব্রায়ান জানান, টুইটারে তার পোস্ট করা লিঙ্কটি তিন দিন টিঁকতে পেরেছিল, তার মধ্যেই লাখ লাখ মানুষ তা দেখে ফেলেছে।

শিবসেনার এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী লেখেন, ‘আজকের এই ভিপিএনের যুগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আইনের যে বিশেষ ধারা প্রয়োগ করে বিবিসি ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করতে চাইছে তাতে কি আদৌ কাজ হবে?’

তিনি মন্তব্য করেন, ‘বরং আপনি যত বাধা সৃষ্টি করতে চাইবেন, যত প্রতিবাদসূচক চিঠি লিখবেন, ততই মানুষ তা দেখার জন্য উৎসুক হয়ে উঠবে।’

এর আগে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব অপূর্ব চন্দ্রা আইটি অ্যাক্ট ২০২১-এর একটি ধারাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির ওই তথ্যচিত্রটির প্রথম পর্ব ভারতে ব্লক করার জন্য ইউটিউবকে নির্দেশ দেন।

ওই লিঙ্ক যারা টুইটারে শেয়ার করছেন, সেই টুইটগুলি সরানোর জন্যও টুইটার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্তা এ খবর সোশ্যাল মিডিয়াতে নিশ্চিত করেন।

দ্য ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, রোববার বিকেল পর্যন্ত ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নামে এই তথ্যচিত্রটির লিঙ্ক আছে, এমন অন্তত ৫০টি টুইট ব্লক করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে যারা এই তথ্যচিত্রটির লিঙ্ক শেয়ার করছে, ভারতের আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু তাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন।

রিজিজু টুইটারে লেখেন, ‘ভারতে কিছু লোক আছেন যারা ঔপনিবেশিক আমলের বিষ ছড়ানোর প্রভাব থেকে এখনো মুক্ত হতে পারেনি।’

তিনি মন্তব্য করেন, ‘এরা মনে করে বিবিসি ভারতের সুপ্রিম কোর্টেরও ঊর্ধ্বে এবং নিজেদের নৈতিক প্রভুদের সন্তুষ্ট করতে তারা দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তিকেও যেকোনো পর্যায়ে টেনে নামাতে দ্বিধা করে না।’

এর আগে ১৭ জানুয়ারি ব্রিটেনের টেলিভিশনে বিবিসির নির্মিত ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নামে এই তথ্যচিত্রটির প্রথম পর্ব প্রচারিত হয়। এর দ্বিতীয় পর্বটি প্রচারিত হওয়ার কথা মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি রাতে।

তখনকার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্রর নির্দেশে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০২ সালের ওই দাঙ্গার পর গুজরাটে একটি অনুসন্ধানী দলও পাঠিয়েছিল, তাদের ওই রিপোর্টকেও বিবিসির তথ্যচিত্রে উদ্ধৃত করা হয়েছে।

তবে ভারতে বিবিসির পক্ষ থেকে ওই তথ্যচিত্রটি টেলিভিশনে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা হয়নি।

এদিকে ব্রিটেনে তথ্যচিত্রটির প্রথম পর্ব প্রচারিত হওয়ার দু‘দিনের মাথায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে একটি ‘প্রোপাগান্ডা বা প্রচারধর্মী’ কাজ বলে বর্ণনা করে এবং এতে ঔপনিবেশিক মানসিকতার পরিচয় ফুটে উঠেছে বলেও মন্তব্য করে।

মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, ‘আমরা মনে করি এই প্রোপাগান্ডা পিসটির উদ্দেশ্য একটি বিশেষ বিকৃত ন্যারেটিভকে তুলে ধরা। এখানে পক্ষপাত, বস্তুনিষ্ঠতার অভাব ও অব্যাহত ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণার ছাপ একেবারে স্পষ্ট।’

ভারতে ৩০০-এর বেশি সাবেক বিচারপতি, আমলা ও সুপরিচিত নাগরিকও একটি খোলা চিঠি লিখে এই তথ্যচিত্রটি বানানোর জন্য বিবিসির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা ভারতে হিন্দু-মুসলিম সঙ্ঘাত উসকে দেয়ার জন্য তাদের দায়ী করছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ইতোমধ্যেই সে দেশের পার্লামেন্টে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তিনি ওই তথ্যচিত্রের বক্তব্যের সাথে সহমত নন।

ওয়েস্টমিনস্টারে হাউস অব কমন্সের সদস্য ইমরান হুসেইন সভায় এই তথ্যচিত্রটির প্রসঙ্গ তুললে প্রধানমন্ত্রী সুনাক মন্তব্য করেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই ধর্মীয় কারণে নির্যাতন হোক না কেন, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই।’

তিনি মন্তব্য করেন, ’কিন্তু এই ডকুমেন্টারিতে যে চরিত্রায়ন করা হয়েছে আমি তার সাথে আদৌ একমত পোষণ করি না।’

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে বিবিসি একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘সর্বোচ্চ সম্পাদকীয় মান অনুসরণ করে নিরলস গবেষণার ফসল এই তথ্যচিত্রটি, যেখানে বিজেপিসহ নানা পক্ষের বক্তব্যই প্রতিফলিত হয়েছে।’

এ তথ্যচিত্রে যে সব প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে, তা নিয়ে ভারত সরকারের বক্তব্যও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা জবাব দিতে অস্বীকার করেছে বলেও বিবিসি জানায়।

সূত্র : বিবিসি

Leave a Comment

ফেইসবুক পেইজ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহবুব হুসাইন; (B.Sc & M.S in Geology & Mining; Master’s in Mass Communication & Journalism From Rajshahi University)

অফিসঃ আশিক টাওয়ার ৩য় তালা, মুড়িপট্টি, সাহেব বাজার, রাজশাহী।
মোবাইলঃ +৮৮ ০১৭৪০-৮৭৬২৮৪
ইমেইলঃ mahabubgmining@gmail.com

তরুণ মাঝি পরিবার

নির্বাহী সম্পাদকঃ- রিজভী আহমেদ
বার্তা সম্পাদকঃ- আব্দুল অলিম রনি

যোগাযোগের ঠিকানা

প্রধান ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ

ললিতাহার, খড়খড়ী-৬২০৪, চন্দ্রিমা, রাজশাহী।
মোবাইল:- +৮৮ ০১৫১৫-২২৮০০৫
ইমেইলঃ torunmajhitv@gmail.com

উপদেষ্টা মন্ডলী

মোঃ মনিরুজ্জামান স্বাধীন
প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল ওয়াকিল

@ 2023 – All Right Reserved torunmajhi.com | Design & Developed by CBA IT