ইউক্রেনকে এবার যুদ্ধবিমান দেওয়া নিয়ে মিত্রদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। মতপার্থক্য ঘুচিয়ে সপ্তাহখানেক আগেই ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহের বিষয়ে একমত হয়েছিল সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোসহ পশ্চিমা মিত্ররা। এরপরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুদ্ধবিমান সরবরাহের আহ্বান জানায় কিয়েভ।
যুদ্ধবিমান সরবরাহ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার প্যারিসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভের। এর আগে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গত সপ্তাহে মিত্রদের কাছ থেকে ট্যাংক সরবরাহের ঘোষণা নিশ্চিত করে ইউক্রেন। এরপরই এফ-১৬–এর মতো চতুর্থ প্রজন্মের পশ্চিমা অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহের বিষয়টি সামনে আনার পরিকল্পনা নেয় কিয়েভ। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা গত শুক্রবার এ পরিকল্পনার কথা জানান।
ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে কি না, সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘না।’
তবে ইউক্রেনের এ ধরনের অনুরোধ রাখতে ইচ্ছুক বলেই মনে হয়েছে ফ্রান্স ও পোল্যান্ডকে। সোমবার নেদারল্যান্ডসের হেগে মাখোঁ সাংবাদিকদের বলেন, যখন সামরিক সহায়তার কথা আসে, তখন ‘এর আওতায় কিছুই বাদ পড়ে না’।
ওয়াশিংটনে বাইডেনের বক্তব্যের আগে ফরাসি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা মন্তব্যে মাখোঁকে জোর দিয়ে বলতে শোনা যায়, এ ধরনের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন উত্তেজনা এড়ানো প্রয়োজন এবং উড়োজাহাজ ‘রাশিয়ার মাটি (আকাশসীমা) স্পর্শ’ করবে না, সে নিশ্চয়তা।
বাইডেনের মন্তব্যের আগে সোমবার পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকিও ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সম্ভাব্য এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের বিষয়টি নাকচ করে দিচ্ছে না ওয়ারশ।
নিজের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা আলাদা মন্তব্যে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের যেকোনো সরবরাহের পদক্ষেপ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ‘পুরোপুরি সমন্বয়ের’ মাধ্যমেই নেওয়া হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক পৃথক পোস্টে নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ ধরনের পদক্ষেপ বাদ না দেওয়ার বিষয়ে পোল্যান্ড ও ফ্রান্স থেকে ‘ইতিবাচক বার্তা’র কথা উল্লেখ করেছেন। এদিকে ইউক্রেনকে ‘উড়োজাহাজ ও কার্গো সক্ষমতা’ সরবরাহ করায় টোকিওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাপান সফররত ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ।