‘বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধার কারণে দেশে নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের ন্যায়বিচার পাওয়ার হার আশঙ্কাজনকহারে কম। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকাংশই তাদের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের বিচার চাইতে পারে না। এমনকি তারা মামলা দায়ের করতে পারলেও তদন্ত বিলম্বিত হয়, বিচার দীর্ঘায়িত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খুব কম মামালায়ই দায়ী ব্যক্তিরা দোষী সাব্যস্ত হয়।’
ব্র্যাকের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা’ শীর্ষক অ্যাডভোকেসি সংলাপে এই গবেষণার ফল এবং সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে গবেষক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৩৮৫টি মামলার ৫০৫ জন আসামির মধ্যে মাত্র ৩৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল মাত্র ৩.৬ শতাংশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার মোছা. মোফেলা খাতুন মেমী নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতার বিচার নিশ্চিত করতে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের আইনি ও বিভাগীয় জবাবদিহিতা ও দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান জানান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ নিশ্চিত করতে বিচার কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীলতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ ঢাকা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফরেনসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশনের (NALSO) পরিচালক (জেলা জজ) মোহাম্মদ আল মামুন আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইনি সহায়তা পরিষেবা নিয়ে আলোচনা করেন।
এএএম/ইএ/জিকেএস