বেনাপোল সীমান্ত এলাকার ইছামতী নদীর পাড় থেকে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে তিন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একজনের মরদেহ নদীতে ভাসমান অবস্থায় ও দুইজনের মরদেহ নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল পৌনে ৪টার মধ্যে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- বেনাপোল পোর্ট থানাধীন দীঘিরপাড় গ্রামের জামিল ঢালির ছেলে সাকিব হোসেন, বেনাপোল পৌর এলাকার কাগজ পুকুর গ্রামের ইউনুস মোড়লের ছেলে জাহাঙ্গীর কবির (৩৭) ও বেনাপোলের দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে সাবুর আলী (৩৫)।
জানা যায়, বুধবার বিকালে শার্শা থানাধীন পাঁচভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় সাকিব হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের নানা জবেদ আলি জানান, তার নাতি সাকিব ট্রাকের হেলপার। তিনি মঙ্গলবার ট্রাকে হেলপারি করার জন্য দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। পরে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। বুধবার বিকালে লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন।
খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আহমেদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। বিকালে পাঁচভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদীতে এক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে সেখানে গিয়ে নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিএসএফের কাছে তারা এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন কিন্তু বিএসএফের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে বুধবার সকালে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালী সীমান্ত থেকে একজন ও শার্শা থানাধীন পাঁচভুলোট সীমান্ত থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন-বেনাপোল পৌর এলাকার কাগজ পুকুর গ্রামের ইউনুস মোড়লের ছেলে জাহাঙ্গীর কবির (৩৭) ও দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে সাবুর হোসেন (৩৫)।
নিহত সাবুর হোসেনের স্ত্রী জানান, সকালে তারা লোক মুখে খবর পান পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদী পাড়ে তার স্বামী পড়ে আছেন। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার পথেই তিনি মারা যান।
নিহত জাহাঙ্গীর কবিরের ভাই বলেন, তার ভাই দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভারত থাকেন। তিনি ভারতীয় মেয়েকে বিয়ে করে ওই দেশের নাগরিক হয়ে বসবাস করতেন। ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকায় তিনি অবৈধপথে কয়েক দিন আগে ভারত থেকে বাড়িতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পরে সকালে লোকমুখে খবর পাই ভাইয়ের মরদেহ ভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদীর পাড়ে পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া সাংবাদিকদের জানান, লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কিভাবে মরদেহটি এখানে এলো এবং কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।