
বার্সেলোনা ৩:১ বেনফিকা (দুই লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনা ৪:১ ব্যবধানে জয়ী)

লামিনে ইয়ামালের গোল, আর সেই গোলে রেকর্ড থাকবে না তা কী করে হয়! বার্সেলোনার ১৭ বছর বয়সী তারকা আজ শুধু নিজেই রেকর্ড গড়েননি, গড়তে সহায়তা করেছেন রাফিনিয়াকেও।
দুই ফরোয়ার্ডের রেকর্ডের রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে বেনফিকার বিপক্ষে বার্সেলোনাও পেয়েছে সহজ জয়। আজ পর্তুগিজ ক্লাবটিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ অগ্রগামিতায় কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা।
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সাই শেষ আটে ওঠা প্রথম দল। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দলটির প্রতিপক্ষ হবে বুধবার ডর্টমুন্ড-লিলের মধ্যকার জয়ী দল।
গত সপ্তাহে বেনফিকার মাঠে ৭০ মিনিটের বেশি সময় ১০ জন নিয়ে খেলেও ১-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফিরেছিল বার্সেলোনা। আজ নিজেদের মাঠে দরকার ছিল শুধু সেই স্কোরলাইন ধরে রাখা।
তবে ইয়ামাল, রাফিনিয়া এটুকুতে সন্তুষ্ট হলে তো! ম্যাচের প্রথমার্ধ্বেই বেনফিকার জালে পৌঁছে যায় তিন গোল। শুরুটা ১১তম মিনিটে।
বেনফিকার কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে বল অন্য প্রান্তে পাঠান ইয়ামাল। অরক্ষিত রাফিনিয়া ভলিতে বল জালে পাঠাতে একটুও দেরি করেননি। এটি ছিল এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্রাজিলিয়ান তারকার দশম গোল।
এর দু মিনিট পরই অবশ্য ম্যাচে সমতা নিয়ে আসে বেনফিকা। নিকোলাস ওতামেন্দির হেডে বল হাতে লাগালেও প্রতিহত করতে পারেননি বার্সা গোলকিপার সেজনি।
ম্যাচে বার্সেলোনা দ্বিতীয় গোলটি পায় ২৭তম মিনিটে, যে গোলটি আসলে ইয়ামাল-জাদু। বাঁ দিক থেকে বল বাড়িয়েছিলেন রাফিনিয়া, গোলমুখে থাকা রবার্ট লেভানডফস্কি যা মিস করে ফেলেন। তবে অপর প্রান্তে পেয়ে যান ইয়ামাল।
বেনফিকা ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে টাচলাইনেও চলে যান ইয়ামাল, সেখান থেকে ধীরে ধীরে আবার পেছনে ফিরে বক্সের মাথায় চলে আসেন। গোলমুখে তেমন কিছু হবে না ভেবে দুই দলের সবাই যখন সামনের দিকে চলে আসা শুরু করেছেন, তখন বাঁ পায়ে দূরের পোস্টে কোনাকুনি শট ইয়ামালের। ঝাঁপিয়েও কিছু করার ছিল না বেনফিকা গোলকিপারের। বার্সেলোনা এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে।
এই গোলেই রেকর্ড গড়েছেন ইয়ামাল। ১৭ বছর ২৪১ দিন বয়সী এই ফরোয়ার্ডই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগের একই ম্যাচে গোল এবং অ্যাসিস্ট করা সবচেয়ে কমবয়সী ফুটবলার। ইয়ামাল ভেঙেছেন ২০১৪ সালে এফসি বাসেলের হয়ে ব্রিল এমবোলোর ১৭ বছর ২৬৩ দিন বয়সে গোল+অ্যাসিস্টের রেকর্ড।
রাফিনিয়ার রেকর্ডটি হয়েছে ম্যাচের ৪২তম মিনিটে। আলেহান্দ্রো বালদে নিজেদের অর্ধ্ব থেকে একাই বল টেনে নিয়ে যান বেনফিকা বক্সের দিকে। শেষ মুহূর্তে গোলের জন্য বল রাফিনিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিলে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই ব্রাজিলিয়ান।

এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি তাঁর ১১তম গোল, আসরের সর্বোচ্চ। তবে রেকর্ডটা হয়েছে ব্রাজিলের দিক থেকে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে ব্রাজিলের আর কেউ কোনো ক্লাবের হয়ে কোনো বছরই ১০ গোলের বেশি করতে পারেননি। রাফিনিয়াই প্রথম। ১০টি করে গোল আছে নেইমার, রিভালদোসহ পাঁচজনের।
প্রথমার্ধ্বে রাফিনিয়া ও ইয়ামালের রেকর্ডে ভর করে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকাই বার্সেলোনার কোয়ার্টার ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে। দ্বিতীয়ার্ধ্বে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ থাকলেও সেটি আর হয়নি।
এর মধ্যে ৬৫তম মিনিটে সবচেয়ে ভালো সুযোগটি নষ্ট করেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। তাতে অবশ্য ক্ষতি কিছু হয়নি। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানের জয়েই শেষ আটের টিকিট হাতে নিয়েছে বার্সেলোনা।