
রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস তথা আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র রমজান। মাসটির অন্যতম আমল হলো তারাবির নামাজ ও তারাবিতে কোরআন খতম। এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নাতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। তারাবির নামাজে পূর্ণ এক খতম কোরআন শরিফ তিলাওয়াত শোনার লক্ষ্যে অনেকেই খতমে তারাবিতে অংশ নেবেন।
তরুণ মাঝি-TMTV অনলাইন নিউজ পোর্টালে আজ ১১তম তারাবিতে পড়া হবে সূরা হিজরের ১ম রুকু থেকে ৬ষ্ঠ রুকু (আয়াত ১-৯৯) পর্যন্ত এবং সূরা নাহলের ১ম রুকু থেকে ১৬তম রুকু (আয়াত ১-১২৮) পর্যন্ত। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে ১৪তম পারা।

সূরা হিজর (১-৯৯) :
১ম রুকুতে (আয়াত ১-১৫) আলোকপাত করা হয়েছে হাশরের ময়দানে কাফেরদের পরিণতি কেমন হবে, কাফেররা রাসূল (সা.) এর সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করছে, পূর্ববর্তী নবীদের সঙ্গেও অনুরূপ আচরণ করেছে। তাই নিরাশ না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে এসব আয়াতে।
২য় ও ৩য় রুকুতে (আয়াত ১৬-৪৪) বলা হয়েছে এই বিশ্বচরাচর ও তার নিজের মাঝে অসংখ্যা নেয়াতম রাজি ছড়িয়ে আছে এসব স্মরণ করা ও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া। হজরত আদমকে (আ.) কীভাবে সৃষ্টি করেছেন, তার মর্যাদা কত ওপরে তুলে ধরেছেন, ইবলিস কীভাবে ধ্বংস হয়েছে, তা-ও বলা হয়েছে। যেন মানুষ নিজের মর্যাদা বোঝে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
৪র্থ ও ৫ম রুকুতে (আয়াত ৪৫-৭৯) বর্ণনা করা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর কাছে মেহমান বেশে দু’জন ফেরেশতার আগমন প্রসঙ্গে। ফেরেশতারা হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) সন্তান জন্মের সুসংবাদ দেয়ার পর বলেছেন, আমরা লুত (আ.) এর কওমের কাছে যাচ্ছি। তাদের আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেব। তারপর হজরত শোয়াইব (আ.) এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের ঘটনা বলে রুকু শেষ করা হয়েছে।
৬ষ্ঠ রুকুর (৮০-৯৯) আলোচ্যবিষয় হলো সামুদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনা, মক্কার কাফেরদের বিরোধিতা দেখে যেন রাসূল (সা.) হতাশ না হয়ে পড়েন সে সম্পর্কে উৎসাহ প্রদান ইত্যাদি।
সূরা নাহল (১-১২৮) :
১ম থেকে ৩য় রুকু (আয়াত ১-২৫) পর্যন্ত আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিভিন্ন নেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। মানুষকে বলেছেন, আমার অনুগ্রহ তোমরা যদি গণনা কর তারপরও শেষ হবে না। তাই আল্লাহ ছাড়া আর কারোর ইবাদত কর না। তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। তারই দাসত্ব কর।
৪র্থ ও ৫ম রুকুতে (আয়াত ২৬-৪০) বলা হয়েছে যারা দুনিয়াতে আল্লাহকে ভয় করে জীবনযাপন করে, তাদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। তারা সঠিক জবাব দিতে পারবে। ওই জবাবের ভিত্তিতে তাদেরকে সুখময় জান্নাত দান করা হবে। আর যারা আল্লাহকে ভয় করে জীবনযাপন করবে না, তাদেরকে যতই বলা হোক না কেন, তারা আল্লাহর রঙে জীবন রাঙাবে না। তাদের জন্য পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব।
৬ষ্ঠ রুকুতে (আয়াত ৪১-৪২) মুহাজিরদের মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আর যারা সত্য অস্বীকার করে তাদেরকে সহজ কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে অন্তরে সত্যবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
৭ম রুকুতে (আয়াত ৫১-৬০) শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
৮ম থেকে ১১তম রুকু পর্যন্ত (আয়াত ৬১-৮৩) শিরকের অসাড়তা ও তাওহিদের যৌক্তিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। সহজে বোঝানো জন্য কিছু উদাহরণ প্রদান করা হয়েছে, যা নিয়ে চিন্তা করলে মানুষের বিবেক নাড়া দেবে।
১২তম রুকুর (আয়াত ৮৪-৮৯) আলোচ্যবিষয় হলো সত্য অস্বীকারকারী পার্থিব জীবনে সত্যকে স্বীকার করলে পরকালে তাদের বাঁচার কোনোো সুযোগ নেই। সেদিন তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
১৩তম থেকে ১৫তম রুকু (আয়াত ৯০-১১৯) পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহকে শরীয়তবিরোধী কোনো কাজে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।
১৪ ও ১৫তম রুকুতে (১০১-১১৯) মুসলমানদের বিশেষ নসিহত করা হয়েছে, যাতে পরকালের পাকড়াও থেকে তারা বাঁচতে পারে।
১৬তম রুকুতে (আয়াত ১২০-১২৮) বিশ্বাসীদের জন্য জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর জীবনাদর্শ তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর ধর্ম এক এবং অভিন্ন।
আজকের পঠিতব্য আয়াত ও অর্থ-
সূরা হিজর (আয়াত ১-৯৯) :
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
الَرَ تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ وَقُرْآنٍ مُّبِينٍ
আলিফ-লা-ম-রা; এগুলো পরিপূর্ণ গ্রন্থ ও সুস্পষ্ট কোরআনের আয়াত। [ সূরা হিজর ১৫:১ ]
رُّبَمَا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ كَانُواْ مُسْلِمِينَ
কোনো সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত। [ সূরা হিজর ১৫:২ ]
ذَرْهُمْ يَأْكُلُواْ وَيَتَمَتَّعُواْ وَيُلْهِهِمُ الأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
আপনি ছেড়ে দিন তাদেরকে, খেয়ে নিক এবং ভোগ করে নিক এবং আশায় ব্যাপৃত থাকুক। অতি সত্বর তারা জেনে নেবে। [ সূরা হিজর ১৫:৩ ]
وَمَا أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلاَّ وَلَهَا كِتَابٌ مَّعْلُومٌ
আমি কোনো জনপদ ধবংস করিনি; কিন্ত তার নির্দিষ্ট সময় লিখিত ছিল। [ সূরা হিজর ১৫:৪ ]
مَّا تَسْبِقُ مِنْ أُمَّةٍ أَجَلَهَا وَمَا يَسْتَأْخِرُونَ
কোনো সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট সময়ের অগ্রে যায় না এবং পশ্চাতে থাকে না। [ সূরা হিজর ১৫:৫ ]
وَقَالُواْ يَا أَيُّهَا الَّذِي نُزِّلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ إِنَّكَ لَمَجْنُونٌ
তারা বললঃ হে ওই ব্যক্তি, যার প্রতি কোরআন নাজিল হয়েছে, আপনি তো একজন উম্মাদ। [ সূরা হিজর ১৫:৬ ]
لَّوْ مَا تَأْتِينَا بِالْمَلائِكَةِ إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ
যদি আপনি সত্যবাদী হন, তবে আমাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে আনেন না কেন? [ সূরা হিজর ১৫:৭ ]
مَا نُنَزِّلُ الْمَلائِكَةَ إِلاَّ بِالحَقِّ وَمَا كَانُواْ إِذًا مُّنظَرِينَ
আমি ফেরেশতাদেরকে একমাত্র ফায়সালার জন্যেই নাজিল করি। তখন তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবে না। [ সূরা হিজর ১৫:৮ ]
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। [ সূরা হিজর ১৫:৯ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِي شِيَعِ الأَوَّلِينَ
আমি আপনার পূর্বে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল প্রেরণ করেছি। [ সূরা হিজর ১৫:১০ ]
وَمَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلاَّ كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
ওদের কাছে এমন কোনো রসূল আসেননি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করতে থাকেনি। [ সূরা হিজর ১৫:১১ ]
كَذَلِكَ نَسْلُكُهُ فِي قُلُوبِ الْمُجْرِمِينَ
এমনিভাবে আমি এ ধরনের আচরণ পাপীদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেই। [ সূরা হিজর ১৫:১২ ]
لاَ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الأَوَّلِينَ
ওরা এর প্রতি বিশ্বাস করবে না। পূর্ববর্তীদের এমন রীতি চলে আসছে। [ সূরা হিজর ১৫:১৩ ]
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاء فَظَلُّواْ فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোনো দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণ ও করতে থাকে। [ সূরা হিজর ১৫:১৪ ]
لَقَالُواْ إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
তবুও ওরা একথাই বলবে যে, আমাদের দৃষ্টির বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে না বরং আমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। [ সূরা হিজর ১৫:১৫ ]
وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَزَيَّنَّاهَا لِلنَّاظِرِينَ
নিশ্চয় আমি আকাশে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছি এবং তাকে দর্শকদের জন্যে সুশোভিত করে দিয়েছি। [ সূরা হিজর ১৫:১৬ ]
وَحَفِظْنَاهَا مِن كُلِّ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ
আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি। [ সূরা হিজর ১৫:১৭ ]
إِلاَّ مَنِ اسْتَرَقَ السَّمْعَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ مُّبِينٌ
কিন্তু যে চুরি করে শুনে পালায়, তার পশ্চাদ্ধাবন করে উজ্জ্বল উল্কাপিন্ড। [ সূরা হিজর ১৫:১৮ ]
وَالأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ شَيْءٍ مَّوْزُونٍ
আমি ভু-পৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি। [ সূরা হিজর ১৫:১৯ ]
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُ بِرَازِقِينَ
আমি তোমাদের জন্যে তাতে জীবিকার উপকরন সৃষ্টি করছি এবং তাদের জন্যেও যাদের অন্নদাতা তোমরা নও। [ সূরা হিজর ১৫:২০ ]
وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلاَّ عِندَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلاَّ بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ
আমার কাছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি। [ সূরা হিজর ১৫:২১ ]
وَأَرْسَلْنَا الرِّيَاحَ لَوَاقِحَ فَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء فَأَسْقَيْنَاكُمُوهُ وَمَا أَنتُمْ لَهُ بِخَازِنِينَ
আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু পরিচালনা করি অতঃপর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, এরপর তোমাদেরকে তা পান করাই। বস্তুতঃ তোমাদের কাছে এর ভান্ডার নেই। [ সূরা হিজর ১৫:২২ ]
وَإنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ
আমিই জীবনদান করি, মৃত্যুদান করি এবং আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। [ সূরা হিজর ১৫:২৩ ]
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ
আমি জেনে রেখেছি তোমাদের অগ্রগামীদেরকে এবং আমি জেনে রেখেছি পশ্চাদগামীদেরকে। [ সূরা হিজর ১৫:২৪ ]
وَإِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ إِنَّهُ حَكِيمٌ عَلِيمٌ
আপনার পালনকর্তাই তাদেরকে একত্রিত করে আনবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানময়। [ সূরা হিজর ১৫:২৫ ]
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الإِنسَانَ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আমি মানবকে পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুস্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি। [ সূরা হিজর ১৫:২৬ ]
وَالْجَآنَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ السَّمُومِ
এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা সৃজিত করেছি। [ সূরা হিজর ১৫:২৭ ]
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির পত্তন করব। [ সূরা হিজর ১৫:২৮ ]
فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُواْ لَهُ سَاجِدِينَ
অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফঁুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো। [ সূরা হিজর ১৫:২৯ ]
فَسَجَدَ الْمَلآئِكَةُ كُلُّهُمْ أَجْمَعُونَ
তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল। [ সূরা হিজর ১৫:৩০ ]
إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى أَن يَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
কিন্তু ইবলীস-সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হল না। [ সূরা হিজর ১৫:৩১ ]
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا لَكَ أَلاَّ تَكُونَ مَعَ السَّاجِدِينَ
আল্লাহ বললেনঃ হে ইবলিস, তোমার কি হলো যে তুমি সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হলে না? [ সূরা হিজর ১৫:৩২ ]
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
বললঃ আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরী ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। [ সূরা হিজর ১৫:৩৩ ]
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيمٌ
আল্লাহ বললেনঃ তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত। [ সূরা হিজর ১৫:৩৪ ]
وَإِنَّ عَلَيْكَ اللَّعْنَةَ إِلَى يَوْمِ الدِّينِ
এবং তোমার প্রতি ন্যায় বিচারের দিন পর্যন্ত অভিসম্পাত। [ সূরা হিজর ১৫:৩৫ ]
قَالَ رَبِّ فَأَنظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন। [ সূরা হিজর ১৫:৩৬ ]
قَالَ فَإِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
আল্লাহ বললেনঃ তোমাকে অবকাশ দেয়া হল। [ সূরা হিজর ১৫:৩৭ ]
إِلَى يَومِ الْوَقْتِ الْمَعْلُومِ
সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত। [ সূরা হিজর ১৫:৩৮ ]
قَالَ رَبِّ بِمَا أَغْوَيْتَنِي لأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِي الأَرْضِ وَلأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ
সে বললঃ হে আমার পলনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথ ভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথ ভ্রষ্ঠ করে দেব। [ সূরা হিজর ১৫:৩৯ ]
إِلاَّ عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
আপনার মনোনীত বান্দাদের ব্যতীত। [ সূরা হিজর ১৫:৪০ ]
قَالَ هَذَا صِرَاطٌ عَلَيَّ مُسْتَقِيمٌ
আল্লাহ বললেনঃ এটা আমা পর্যন্ত সোজা পথ। [ সূরা হিজর ১৫:৪১ ]
إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ إِلاَّ مَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْغَاوِينَ
যারা আমার বান্দা, তাদের উপর তোমার কোনো ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রান্তদের মধ্য থেকে যারা তোমার পথে চলে। [ সূরা হিজর ১৫:৪২ ]
وَإِنَّ جَهَنَّمَ لَمَوْعِدُهُمْ أَجْمَعِينَ
তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম। [ সূরা হিজর ১৫:৪৩ ]
لَهَا سَبْعَةُ أَبْوَابٍ لِّكُلِّ بَابٍ مِّنْهُمْ جُزْءٌ مَّقْسُومٌ
এর সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্যে এক একটি পৃথক দল আছে। [ সূরা হিজর ১৫:৪৪ ]
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
নিশ্চয় খোদাভীরুরা বাগান ও নির্ঝরিনীসহূহে থাকবে। [ সূরা হিজর ১৫:৪৫ ]
ادْخُلُوهَا بِسَلاَمٍ آمِنِينَ
বলা হবেঃ এগুলোতে নিরাপত্তা ও শান্তি সহকরে প্রবেশ কর। [ সূরা হিজর ১৫:৪৬ ]
وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلَى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ
তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দেব। তারা ভাই ভাইয়ের মত সামনা-সামনি আসনে বসবে। [ সূরা হিজর ১৫:৪৭ ]
لاَ يَمَسُّهُمْ فِيهَا نَصَبٌ وَمَا هُم مِّنْهَا بِمُخْرَجِينَ
সেখানে তাদের মোটেই কষ্ট হবে না এবং তারা সেখান থেকে বহিস্কৃত হবে না। [ সূরা হিজর ১৫:৪৮ ]
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল দয়ালু। [ সূরা হিজর ১৫:৪৯ ]
وَ أَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الأَلِيمَ
এবং ইহাও যে, আমার শাস্তিই যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। [ সূরা হিজর ১৫:৫০ ]
وَنَبِّئْهُمْ عَن ضَيْفِ إِ بْراَهِيمَ
আপনি তাদেরকে ইব্রাহীমের মেহমানদের অবস্থা শুনিয়ে দিন। [ সূরা হিজর ১৫:৫১ ]
إِذْ دَخَلُواْ عَلَيْهِ فَقَالُواْ سَلامًا قَالَ إِنَّا مِنكُمْ وَجِلُونَ
যখন তারা তাঁর গৃহে আগমন করল এবং বললঃ সালাম। তিনি বললেনঃ আমরা তোমাদের ব্যাপারে ভীত। [ সূরা হিজর ১৫:৫২ ]
قَالُواْ لاَ تَوْجَلْ إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلامٍ عَلِيمٍ
তারা বললঃ ভয় করবেন না। আমরা আপনাকে একজন জ্ঞানবান ছেলে-সন্তান ের সুসংবাদ দিচ্ছি। [ সূরা হিজর ১৫:৫৩ ]
قَالَ أَبَشَّرْتُمُونِي عَلَى أَن مَّسَّنِيَ الْكِبَرُ فَبِمَ تُبَشِّرُونَ
তিনি বললেনঃ তোমরা কি আমাকে এমতাবস্থায় সুসংবাদ দিচ্ছ, যখন আমি বার্ধক্যে পৌছে গেছি ? [ সূরা হিজর ১৫:৫৪ ]
قَالُواْ بَشَّرْنَاكَ بِالْحَقِّ فَلاَ تَكُن مِّنَ الْقَانِطِينَ
তারা বললঃ আমরা আপনাকে সত্য সু-সংবাদ দিচ্ছি! অতএব আপনি নিরাশ হবেন না। [ সূরা হিজর ১৫:৫৫ ]
قَالَ وَمَن يَقْنَطُ مِن رَّحْمَةِ رَبِّهِ إِلاَّ الضَّآلُّونَ
তিনি বললেনঃ পালনকর্তার রহমত থেকে পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে নিরাশ হয়? [ সূরা হিজর ১৫:৫৬ ]
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
তিনি বললেনঃ অতঃপর তোমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কি হে আল্লাহর প্রেরিতগণ ? [ সূরা হিজর ১৫:৫৭ ]
قَالُواْ إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বললঃ আমরা একটি অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি। [ সূরা হিজর ১৫:৫৮ ]
إِلاَّ آلَ لُوطٍ إِنَّا لَمُنَجُّوهُمْ أَجْمَعِينَ
কিন্তু লূতের পরিবার-পরিজ ন। আমরা অবশ্যই তাদের সবাইকে বাঁচিয়ে নেব। [ সূরা হিজর ১৫:৫৯ ]
إِلاَّ امْرَأَتَهُ قَدَّرْنَا إِنَّهَا لَمِنَ الْغَابِرِينَ
তবে তার স্ত্রী। আমরা স্থির করেছি যে, সে থেকে যাওয়াদের দলভূক্ত হবে। [ সূরা হিজর ১৫:৬০ ]
فَلَمَّا جَاء آلَ لُوطٍ الْمُرْسَلُونَ
অতঃপর যখন প্রেরিতরা লূতের গৃহে পৌছল। [ সূরা হিজর ১৫:৬১ ]
قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
তিনি বললেনঃ তোমরা তো অপরিচিত লোক। [ সূরা হিজর ১৫:৬২ ]
قَالُواْ بَلْ جِئْنَاكَ بِمَا كَانُواْ فِيهِ يَمْتَرُونَ
তারা বললঃ না বরং আমরা আপনার কাছে ঐ বস্তু নিয়ে এসেছি, যে সম্পর্কে তারা বিবাদ করত। [ সূরা হিজর ১৫:৬৩ ]
وَأَتَيْنَاكَ بَالْحَقِّ وَإِنَّا لَصَادِقُونَ
এবং আমরা আপনার কাছে সত্য বিষয় নিয়ে এসেছি এবং আমরা সত্যবাদী। [ সূরা হিজর ১৫:৬৪ ]
فَأَسْرِ بِأَهْلِكَ بِقِطْعٍ مِّنَ اللَّيْلِ وَاتَّبِعْ أَدْبَارَهُمْ وَلاَ يَلْتَفِتْ مِنكُمْ أَحَدٌ وَامْضُواْ حَيْثُ تُؤْمَرُونَ
অতএব আপনি শেষরাত্রে পরিবারের সকলকে নিয়ে চলে যান এবং আপনি তাদের পশ্চাদনুসরণ করবেন না এবং আপনাদের মধ্যে কেউ যেন পিছন ফিরে না দেখে। আপনারা যেখানে আদেশ প্রাপ্ত হচ্ছেন সেখানে যান। [ সূরা হিজর ১৫:৬৫ ]
وَقَضَيْنَا إِلَيْهِ ذَلِكَ الأَمْرَ أَنَّ دَابِرَ هَؤُلاء مَقْطُوعٌ مُّصْبِحِينَ
আমি লূতকে এ বিষয় পরিজ্ঞাত করে দেই যে, সকাল হলেই তাদেরকে সমুলে বিনাশ করে দেয়া হবে। [ সূরা হিজর ১৫:৬৬ ]
وَجَاء أَهْلُ الْمَدِينَةِ يَسْتَبْشِرُونَ
শহরবাসীরা আনন্দ-উল্লা স করতে করতে পৌছল। [ সূরা হিজর ১৫:৬৭ ]
قَالَ إِنَّ هَؤُلاء ضَيْفِي فَلاَ تَفْضَحُونِ
লূত বললেনঃ তারা আমার মেহমান। অতএব আমাকে লাঞ্ছিত করো না। [ সূরা হিজর ১৫:৬৮ ]
وَاتَّقُوا اللّهَ وَلاَ تُخْزُونِ
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার ইযযত নষ্ট করো না। [ সূরা হিজর ১৫:৬৯ ]
قَالُوا أَوَلَمْ نَنْهَكَ عَنِ الْعَالَمِينَ
তার বললঃ আমরা কি আপনাকে জগৎদ্বাসীর সমর্থন করতে নিষেধ করিনি। [ সূরা হিজর ১৫:৭০ ]
قَالَ هَؤُلاء بَنَاتِي إِن كُنتُمْ فَاعِلِينَ
তিনি বললেনঃ যদি তোমরা একান্ত কিছু করতেই চাও, তবে আমার কন্যারা উপস্থিত আছে। [ সূরা হিজর ১৫:৭১ ]
لَعَمْرُكَ إِنَّهُمْ لَفِي سَكْرَتِهِمْ يَعْمَهُونَ
আপনার প্রাণের কসম, তারা আপন নেশায় প্রমত্ত ছিল। [ সূরা হিজর ১৫:৭২ ]
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُشْرِقِينَ
অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তাদেরকে প্রচন্ড একটি শব্দ এসে পাকড়াও করল। [ সূরা হিজর ১৫:৭৩ ]
فَجَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ
অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর কঙ্করের প্রস্থর বর্ষণ করলাম। [ সূরা হিজর ১৫:৭৪ ]
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِينَ
নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [ সূরা হিজর ১৫:৭৫ ]
وَإِنَّهَا لَبِسَبِيلٍ مُّقيمٍ
জনপদটি সোজা পথে অবস্থিত রয়েছে। [ সূরা হিজর ১৫:৭৬ ]
إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّلْمُؤمِنِينَ
নিশ্চয় এতে ঈমানদারদের জন্যে নিদর্শণ আছে। [ সূরা হিজর ১৫:৭৭ ]
وَإِن كَانَ أَصْحَابُ الأَيْكَةِ لَظَالِمِينَ
নিশ্চয় গহীন বনের অধিবাসীরা পাপী ছিল। [ সূরা হিজর ১৫:৭৮ ]
فَانتَقَمْنَا مِنْهُمْ وَإِنَّهُمَا لَبِإِمَامٍ مُّبِينٍ
অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। উভয় বস্তি প্রকাশ্য রাস্তার উপর অবস্থিত। [ সূরা হিজর ১৫:৭৯ ]
وَلَقَدْ كَذَّبَ أَصْحَابُ الحِجْرِ الْمُرْسَلِينَ
নিশ্চয় হিজরের বাসিন্দারা পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। [ সূরা হিজর ১৫:৮০ ]
وَآتَيْنَاهُمْ آيَاتِنَا فَكَانُواْ عَنْهَا مُعْرِضِينَ
আমি তাদেরকে নিজের নিদর্শনাবলী দিয়েছি। অতঃপর তারা এগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। [ সূরা হিজর ১৫:৮১ ]
وَكَانُواْ يَنْحِتُونَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا آمِنِينَ
তারা পাহাড়ে নিশ্চিন্তে ঘর খোদাই করত। [ সূরা হিজর ১৫:৮২ ]
فَأَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ مُصْبِحِينَ
অতঃপর এক প্রত্যুষে তাদের উপর একটা শব্দ এসে আঘাত করল। [ সূরা হিজর ১৫:৮৩ ]
فَمَا أَغْنَى عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
তখন কোনো উপকারে আসল না যা তারা উপার্জন করেছিল। [ সূরা হিজর ১৫:৮৪ ]
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلاَّ بِالْحَقِّ وَإِنَّ السَّاعَةَ لآتِيَةٌ فَاصْفَحِ الصَّفْحَ الْجَمِيلَ
আমি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী যা আছে তা তাৎপর্যহীন সৃষ্টি করিনি। কেয়ামত অবশ্যই আসবে। অতএব পরম ঔদাসীন্যের সাথে ওদের ক্রিয়াকর্ম উপক্ষো করুন। [ সূরা হিজর ১৫:৮৫ ]
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْخَلاَّقُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। [ সূরা হিজর ১৫:৮৬ ]
وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنَ الْعَظِيمَ
আমি আপনাকে সাতটি বার বার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কোরআন দিয়েছি। [ সূরা হিজর ১৫:৮৭ ]
لاَ تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِلْمُؤْمِنِينَ
আপনি চক্ষু তুলে ঐ বস্তুর প্রতি দেখবেন না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি, তাদের জন্যে চিন্তিত হবেন না আর ঈমানদারদের জন্যে স্বীয় বাহু নত করুন। [ সূরা হিজর ১৫:৮৮ ]
وَقُلْ إِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْمُبِينُ
আর বলুনঃ আমি প্রকাশ্য ভয় প্রদর্শক। [ সূরা হিজর ১৫:৮৯ ]
كَمَا أَنزَلْنَا عَلَى المُقْتَسِمِينَ
যেমন আমি নাজিল করেছি যারা বিভিন্ন মতে বিভক্ত তাদের উপর। [ সূরা হিজর ১৫:৯০ ]
الَّذِينَ جَعَلُوا الْقُرْآنَ عِضِينَ
যারা কোরআনকে খন্ড খন্ড করেছে। [ সূরা হিজর ১৫:৯১ ]
فَوَرَبِّكَ لَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ
অতএব আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই ওদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। [ সূরা হিজর ১৫:৯২ ]
عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ
ওদের কাজকর্ম সম্পর্কে। [ সূরা হিজর ১৫:৯৩ ]
فَاصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
অতএব আপনি প্রকাশ্যে শুনিয়ে দিন যা আপনাকে আদেশ করা হয় এবং মুশরিকদের পরওয়া করবেন না। [ সূরা হিজর ১৫:৯৪ ]
إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِئِينَ
বিদ্রুপকারীদের জন্যে আমি আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট। [ সূরা হিজর ১৫:৯৫ ]
الَّذِينَ يَجْعَلُونَ مَعَ اللّهِ إِلـهًا آخَرَ فَسَوْفَ يَعْمَلُونَ
যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য সাব্যস্ত করে। অতএব অতিসত্তর তারা জেনে নেবে। [ সূরা হিজর ১৫:৯৬ ]
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّكَ يَضِيقُ صَدْرُكَ بِمَا يَقُولُونَ
আমি জানি যে আপনি তাদের কথাবর্তায় হতোদ্যম হয়ে পড়েন। [ সূরা হিজর ১৫:৯৭ ]
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
অতএব আপনি পালনকর্তার সৌন্দর্য স্মরণ করুন এবং সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যান। [ সূরা হিজর ১৫:৯৮ ]
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ
এবং পালনকর্তার এবাদত করুন, যে পর্যন্ত আপনার কাছে নিশ্চিত কথা না আসে। [ সূরা হিজর ১৫:৯৯ ]
সূরা নাহল (আয়াত ১-১২৮) :
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
أَتَى أَمْرُ اللّهِ فَلاَ تَسْتَعْجِلُوهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
আল্লাহর নির্দেশ এসে গেছে। অতএব এর জন্যে তাড়াহুড়া করো না। ওরা যেসব শরীক সাব্যস্ত করছে সেসব থেকে তিনি পবিত্র ও বহু উর্ধ্বে। [ সূরা নাহল ১৬:১ ]
يُنَزِّلُ الْمَلآئِكَةَ بِالْرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِ عَلَى مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ أَنْ أَنذِرُواْ أَنَّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ أَنَاْ فَاتَّقُونِ
তিনি স্বীয় নির্দেশে বান্দাদের মধ্যে যার কাছে ইচ্ছা, নির্দেশসহ ফেরেশতাদেরকে এই মর্মে নাজিল করেন যে, হুশিয়ার করে দাও, আমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। অতএব আমাকে ভয় কর। [ সূরা নাহল ১৬:২ ]
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ بِالْحَقِّ تَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
যিনি যথাবিধি আকাশরাজি ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন। তারা যাকে শরীক করে তিনি তার বহু উর্ধ্বে। [ সূরা নাহল ১৬:৩ ]
خَلَقَ الإِنسَانَ مِن نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
তিনি মানবকে এক ফোটা বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন। এতদসত্বেও সে প্রকাশ্য বিতন্ডাকারী হয়ে গেছে। [ সূরা নাহল ১৬:৪ ]
وَالأَنْعَامَ خَلَقَهَا لَكُمْ فِيهَا دِفْءٌ وَمَنَافِعُ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ
চতুষ্পদ জন্তুকে তিনি সৃষ্টি করেছেন। এতে তোমাদের জন্যে শীত বস্ত্রের উপকরণ আছে। আর অনেক উপকার হয়েছে এবং কিছু সংখ্যককে তোমরা আহার্যে? পরিণত করে থাক। [ সূরা নাহল ১৬:৫ ]
وَلَكُمْ فِيهَا جَمَالٌ حِينَ تُرِيحُونَ وَحِينَ تَسْرَحُونَ
এদের দ্বারা তোমাদের সম্মান হয়, যখন বিকালে চারণভূমি থেকে নিয়ে আস এবং সকালে চারণ ভূমিতে নিয়ে যাও। [ সূরা নাহল ১৬:৬ ]
وَتَحْمِلُ أَثْقَالَكُمْ إِلَى بَلَدٍ لَّمْ تَكُونُواْ بَالِغِيهِ إِلاَّ بِشِقِّ الأَنفُسِ إِنَّ رَبَّكُمْ لَرَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
এরা তোমাদের বোঝা এমন শহর পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যায়, যেখানে তোমরা প্রাণান্তকর পরিশ্রম ব্যতীত পৌছাতে পারতে না। নিশ্চয় তোমাদের প্রভু অত্যন্ত দয়াদ্র, পরম দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:৭ ]
وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ وَالْحَمِيرَ لِتَرْكَبُوهَا وَزِينَةً وَيَخْلُقُ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
তোমাদের আরোহণের জন্যে এবং শোভার জন্যে তিনি ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি এমন জিনিস সৃষ্টি করেন যা তোমরা জান না। [ সূরা নাহল ১৬:৮ ]
وَعَلَى اللّهِ قَصْدُ السَّبِيلِ وَمِنْهَا جَآئِرٌ وَلَوْ شَاء لَهَدَاكُمْ أَجْمَعِينَ
সরল পথ আল্লাহ পর্যন্ত পৌছে এবং পথগুলোর মধ্যে কিছু বক্র পথও রয়েছে। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন। [ সূরা নাহল ১৬:৯ ]
هُوَ الَّذِي أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء لَّكُم مِّنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ
তিনি তোমাদের জন্যে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন। এই পানি থেকে তোমরা পান কর এবং এ থেকেই উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়, যাতে তোমরা পশুচারণ কর। [ সূরা নাহল ১৬:১০ ]
يُنبِتُ لَكُم بِهِ الزَّرْعَ وَالزَّيْتُونَ وَالنَّخِيلَ وَالأَعْنَابَ وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
এ পানি দ্বারা তোমাদের জন্যে উৎপাদন করেন ফসল, যয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও সর্বপ্রকার ফল। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:১১ ]
وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالْنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالْنُّجُومُ مُسَخَّرَاتٌ بِأَمْرِهِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
তিনিই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি, দিন, সূর্য এবং চন্দ্রকে। তারকাসমূহ তাঁরই বিধানের কর্মে নিয়োজিত রয়েছে। নিশ্চয়ই এতে বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:১২ ]
وَمَا ذَرَأَ لَكُمْ فِي الأَرْضِ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ
তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে যেসব রং-বেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলোতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্যে যারা চিন্তা-ভাবনা করে। [ সূরা নাহল ১৬:১৩ ]
وَهُوَ الَّذِي سَخَّرَ الْبَحْرَ لِتَأْكُلُواْ مِنْهُ لَحْمًا طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُواْ مِنْهُ حِلْيَةً تَلْبَسُونَهَا وَتَرَى الْفُلْكَ مَوَاخِرَ فِيهِ وَلِتَبْتَغُواْ مِن فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
তিনিই কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন সমুদ্রকে, যাতে তা থেকে তোমরা তাজা মাংস খেতে পার এবং তা থেকে বের করতে পার পরিধেয় অলঙ্কার। তুমি তাতে জলযান সমূহকে পানি চিরে চলতে দেখবে এবং যাতে তোমরা আল্লাহর কৃপা অন্বেষণ কর এবং যাতে তার অনুগ্রহ স্বীকার কর। [ সূরা নাহল ১৬:১৪ ]
وَأَلْقَى فِي الأَرْضِ رَوَاسِيَ أَن تَمِيدَ بِكُمْ وَأَنْهَارًا وَسُبُلاً لَّعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
এবং তিনি পৃথিবীর উপর বোঝা রেখেছেন যে, কখনো যেন তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে-দুলে না পড়ে এবং নদী ও পথ তৈরী করেছেন, যাতে তোমরা পথ প্রদর্শিত হও। [ সূরা নাহল ১৬:১৫ ]
وَعَلامَاتٍ وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُونَ
এবং তিনি পথ নির্ণয়ক বহু চিহ্ন সৃষ্টি করেছেন, এবং তারকা দ্বারা ও মানুষ পথের নির্দেশ পায়। [ সূরা নাহল ১৬:১৬ ]
أَفَمَن يَخْلُقُ كَمَن لاَّ يَخْلُقُ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
যিনি সৃষ্টি করে, তিনি কি সে লোকের সমতুল্য যে সৃষ্টি করতে পারে না? তোমরা কি চিন্তা করবে না? [ সূরা নাহল ১৬:১৭ ]
وَإِن تَعُدُّواْ نِعْمَةَ اللّهِ لاَ تُحْصُوهَا إِنَّ اللّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:১৮ ]
وَاللّهُ يَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ
আল্লাহ জানেন যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর। [ সূরা নাহল ১৬:১৯ ]
وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ لاَ يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ
এবং যারা আল্লাহকে ছেড়ে অন্যদের ডাকে, ওরা তো কোনো বস্তুই সৃষ্টি করে না; বরং ওরা নিজেরাই সৃজিত। [ সূরা নাহল ১৬:২০ ]
أَمْواتٌ غَيْرُ أَحْيَاء وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ
তারা মৃত-প্রাণহীন এবং কবে পুনরুত্থিত হবে, জানে না। [ সূরা নাহল ১৬:২১ ]
إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَالَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ قُلُوبُهُم مُّنكِرَةٌ وَهُم مُّسْتَكْبِرُونَ
আমাদের ইলাহ একক ইলাহ। অনন্তর যারা পরজীবনে বিশ্বাস করে না, তাদের অন্তর সত্যবিমুখ এবং তারা অহংকার প্রদর্শন করেছে। [ সূরা নাহল ১৬:২২ ]
لاَ جَرَمَ أَنَّ اللّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْتَكْبِرِينَ
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের গোপন ও প্রকাশ্য যাবতীয় বিষয়ে অবগত। নিশ্চিতই তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না। [ সূরা নাহল ১৬:২৩ ]
وَإِذَا قِيلَ لَهُم مَّاذَا أَنزَلَ رَبُّكُمْ قَالُواْ أَسَاطِيرُ الأَوَّلِينَ
যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমাদের পালনকর্তা কি নাজিল করেছেন? তারা বলেঃ পূর্ববর্তীদের কিসসা-কাহিনী। [ সূরা নাহল ১৬:২৪ ]
لِيَحْمِلُواْ أَوْزَارَهُمْ كَامِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمِنْ أَوْزَارِ الَّذِينَ يُضِلُّونَهُم بِغَيْرِ عِلْمٍ أَلاَ سَاء مَا يَزِرُونَ
ফলে কেয়ামতের দিন ওরা পূর্ণমাত্রায় বহন করবে ওদের পাপভার এবং পাপভার তাদেরও যাদেরকে তারা তাদের অজ্ঞতাহেতু বিপথগামী করে শুনে নাও, খুবই নিকৃষ্ট বোঝা যা তারা বহন করে। [ সূরা নাহল ১৬:২৫ ]
قَدْ مَكَرَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَأَتَى اللّهُ بُنْيَانَهُم مِّنَ الْقَوَاعِدِ فَخَرَّ عَلَيْهِمُ السَّقْفُ مِن فَوْقِهِمْ وَأَتَاهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَشْعُرُونَ
নিশ্চয় চক্রান্ত করেছে তাদের পূর্ববর্তীরা, অতঃপর আল্লাহ তাদের চক্রান্তের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন। এরপর উপর থেকে তাদের মাথায় ছাদ ধ্বসে পড়ে গেছে এবং তাদের উপর আযাব এসেছে যেখান থেকে তাদের ধারণা ছিল না। [ সূরা নাহল ১৬:২৬ ]
ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُخْزِيهِمْ وَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَآئِيَ الَّذِينَ كُنتُمْ تُشَاقُّونَ فِيهِمْ قَالَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْعِلْمَ إِنَّ الْخِزْيَ الْيَوْمَ وَالْسُّوءَ عَلَى الْكَافِرِينَ
অতঃপর কেয়ামতের দিন তিনি তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন এবং বলবেনঃ আমার অংশীদাররা কোথায়, যাদের ব্যাপারে তোমরা খুব হঠকারিতা করতে? যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত হয়েছিল তারা বলবেঃ নিশ্চয়ই আজকের দিনে লাঞ্ছনা ও দুর্গতি কাফেরদের জন্যে, [ সূরা নাহল ১৬:২৭ ]
الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلائِكَةُ ظَالِمِي أَنفُسِهِمْ فَأَلْقَوُاْ السَّلَمَ مَا كُنَّا نَعْمَلُ مِن سُوءٍ بَلَى إِنَّ اللّهَ عَلِيمٌ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
ফেরেশতারা তাদের জান এমতাঅবস্থায় কবজ করে যে, তারা নিজেদের উপর যুলুম করেছে। তখন তারা অনুগত্য প্রকাশ করবে যে, আমরা তো কোনো মন্দ কাজ করতাম না। হঁ্যা নিশ্চয় আল্লাহ সববিষয় অবগত আছেন, যা তোমরা করতে। [ সূরা নাহল ১৬:২৮ ]
فَادْخُلُواْ أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا فَلَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ
অতএব, জাহান্নামের দরজসমূহে প্রবেশ কর, এতেই অনন্তকাল বাস কর। আর অহংকারীদের আবাসস্থল কতই নিকৃষ্ট। [ সূরা নাহল ১৬:২৯ ]
وَقِيلَ لِلَّذِينَ اتَّقَوْاْ مَاذَا أَنزَلَ رَبُّكُمْ قَالُواْ خَيْرًا لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ فِي هَذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ وَلَدَارُ الآخِرَةِ خَيْرٌ وَلَنِعْمَ دَارُ الْمُتَّقِينَ
পরহেযগারদেরকে বলা হয়ঃ তোমাদের পালনকর্তা কি নাজিল করেছেন? তারা বলেঃ মহাকল্যাণ। যারা এ জগতে সৎকাজ করে, তাদের জন্যে কল্যাণ রয়েছে এবং পরকালের গৃহ আরও উত্তম। পরহেযগারদের গৃহ কি চমৎকার? [ সূরা নাহল ১৬:৩০ ]
جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ لَهُمْ فِيهَا مَا يَشَآؤُونَ كَذَلِكَ يَجْزِي اللّهُ الْمُتَّقِينَ
সর্বদা বসবাসের উদ্যান, তারা যাতে প্রবেশ করবে। এর পাদদেশে দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হয় তাদের জন্যে তাতে তা-ই রয়েছে, যা তারা চায় এমনিভাবে প্রতিদান দেবেন আল্লাহর পরহেযগারদেরকে, [ সূরা নাহল ১৬:৩১ ]
الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلآئِكَةُ طَيِّبِينَ يَقُولُونَ سَلامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُواْ الْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
ফেরেশতা যাদের জান কবজ করেন তাদের পবিত্র থাকা অবস্থায়। ফেরেশতারা বলেঃ তোমাদের প্রতি শাস্তি বর্ষিত হোক। তোমরা যা করতে, তার প্রতিদানে জান্নাতে প্রবেশ কর। [ সূরা নাহল ১৬:৩২ ]
هَلْ يَنظُرُونَ إِلاَّ أَن تَأْتِيَهُمُ الْمَلائِكَةُ أَوْ يَأْتِيَ أَمْرُ رَبِّكَ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَمَا ظَلَمَهُمُ اللّهُ وَلـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
কাফেররা কি এখন অপেক্ষা করছে যে, তাদের কাছে ফেরেশতারা আসবে কিংবা আপনার পালনকর্তার নির্দেশ পৌছবে? তাদের পূর্ববর্তীরা এমনই করেছিল। আল্লাহ তাদের প্রতি অবিচার করেননি; কিন্তু তারা স্বয়ং নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল। [ সূরা নাহল ১৬:৩৩ ]
فَأَصَابَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا عَمِلُواْ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُواْ بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
সুতরাং তাদের মন্দ কাজের শাস্তি তাদেরই মাথায় আপতিত হয়েছে এবং তারা যে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত, তাই উল্টে তাদের উপর পড়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৩৪ ]
وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ لَوْ شَاء اللّهُ مَا عَبَدْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ نَّحْنُ وَلا آبَاؤُنَا وَلاَ حَرَّمْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاغُ الْمُبِينُ
মুশরিকরা বললঃ যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমরা তাঁকে ছাড়া কারও এবাদত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরাও করত না এবং তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোনো বস্তুই আমরা হারাম করতাম না। তাদের পূর্ববর্তীরা এমনই করেছে। রাসূলের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুস্পষ্ট বাণী পৌছিয়ে দেয়া। [ সূরা নাহল ১৬:৩৫ ]
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلالَةُ فَسِيرُواْ فِي الأَرْضِ فَانظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ
আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়েত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেল। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৩৬ ]
إِن تَحْرِصْ عَلَى هُدَاهُمْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي مَن يُضِلُّ وَمَا لَهُم مِّن نَّاصِرِينَ
আপনি তাদেরকে সুপথে আনতে আগ্রহী হলেও আল্লাহ যাকে বিপথগামী করেন তিনি তাকে পথ দেখান না এবং তাদের কোনো সাহায্যকারী ও নেই। [ সূরা নাহল ১৬:৩৭ ]
وَأَقْسَمُواْ بِاللّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لاَ يَبْعَثُ اللّهُ مَن يَمُوتُ بَلَى وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا وَلـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُونَ
তারা আল্লাহর নামে কঠোর শপথ করে যে, যার মৃত্যু হয় আল্লাহ তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন না। অবশ্যই এর পাকাপোক্ত ওয়াদা হয়ে গেছে। কিন্তু, অধিকাংশ লোক জানে না। [ সূরা নাহল ১৬:৩৮ ]
لِيُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي يَخْتَلِفُونَ فِيهِ وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ كَفَرُواْ أَنَّهُمْ كَانُواْ كَاذِبِينَ
তিনি পুনরুজ্জীবিত করবেনই, যাতে যে বিষয়ে তাদের মধ্যে মতানৈক্য ছিল তা প্রকাশ করা যায় এবং যাতে কাফেরেরা জেনে নেয় যে, তারা মিথ্যাবাদী ছিল। [ সূরা নাহল ১৬:৩৯ ]
إِنَّمَا قَوْلُنَا لِشَيْءٍ إِذَا أَرَدْنَاهُ أَن نَّقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ
আমি যখন কোনো কিছু করার ইচ্ছা করি; তখন তাকে কেবল এতটুকুই বলি যে, হয়ে যাও,। সুতরাং তা হয়ে যায়। [ সূরা নাহল ১৬:৪০ ]
وَالَّذِينَ هَاجَرُواْ فِي اللّهِ مِن بَعْدِ مَا ظُلِمُواْ لَنُبَوِّئَنَّهُمْ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَلَأَجْرُ الآخِرَةِ أَكْبَرُ لَوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ
যারা নির্যাতিত হওয়ার পর আল্লাহর জন্যে গৃহত্যাগ করেছে, আমি অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়াতে উত্তম আবাস দেব এবং পরকালের পুরস্কার তো সর্বাধিক; হায়! যদি তারা জানত। [ সূরা নাহল ১৬:৪১ ]
الَّذِينَ صَبَرُواْ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
যারা দৃঢ়পদ রয়েছে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করেছে। [ সূরা নাহল ১৬:৪২ ]
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلاَّ رِجَالاً نُّوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানবকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে; [ সূরা নাহল ১৬:৪৩ ]
بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَأَنزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে নির্দেশনাবলী ও অবতীর্ণ গ্রন্থসহ এবং আপনার কাছে আমি স্মরণিকা অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বিবৃত করেন, যে গুলো তোদের প্রতি নাজিল করা হয়েছে, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। [ সূরা নাহল ১৬:৪৪ ]
أَفَأَمِنَ الَّذِينَ مَكَرُواْ السَّيِّئَاتِ أَن يَخْسِفَ اللّهُ بِهِمُ الأَرْضَ أَوْ يَأْتِيَهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَشْعُرُونَ
যারা কুচক্র করে, তারা কি এ বিষয়ে ভয় করে না যে, আল্লাহ তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দিবেন কিংবা তাদের কাছে এমন জায়গা থেকে আযাব আসবে যা তাদের ধারণাতীত। [ সূরা নাহল ১৬:৪৫ ]
أَوْ يَأْخُذَهُمْ فِي تَقَلُّبِهِمْ فَمَا هُم بِمُعْجِزِينَ
কিংবা চলাফেরার মধ্যেই তাদেরকে পাকড়াও করবে, তারা তো তা ব্যর্থ করতে পারবে না। [ সূরা নাহল ১৬:৪৬ ]
أَوْ يَأْخُذَهُمْ عَلَى تَخَوُّفٍ فَإِنَّ رَبَّكُمْ لَرؤُوفٌ رَّحِيمٌ
কিংবা ভীতি প্রদর্শনের পর তাদেরকে পাকড়াও করবেন? তোমাদের পালনকর্তা তো অত্যন্ত নম্র, দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:৪৭ ]
أَوَ لَمْ يَرَوْاْ إِلَى مَا خَلَقَ اللّهُ مِن شَيْءٍ يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالْشَّمَآئِلِ سُجَّدًا لِلّهِ وَهُمْ دَاخِرُونَ
তারা কি আল্লাহর সৃজিত বস্তু দেখে না, যার ছায়া আল্লাহর প্রতি বিনীতভাবে সেজদাবনত থেকে ডান ও বাম দিকে ঝুঁকে পড়ে। [ সূরা নাহল ১৬:৪৮ ]
وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مِن دَآبَّةٍ وَالْمَلآئِكَةُ وَهُمْ لاَ يَسْتَكْبِرُونَ
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা অহংকার করে না। [ সূরা নাহল ১৬:৪৯ ]
يَخَافُونَ رَبَّهُم مِّن فَوْقِهِمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
তারা তাদের উপর পরাক্রমশালী তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে এবং তারা যা আদেশ পায়, তা করে [ সূরা নাহল ১৬:৫০ ]
وَقَالَ اللّهُ لاَ تَتَّخِذُواْ إِلـهَيْنِ اثْنَيْنِ إِنَّمَا هُوَ إِلهٌ وَاحِدٌ فَإيَّايَ فَارْهَبُونِ
আল্লাহ বললেনঃ তোমরা দুই উপাস্য গ্রহণ করো না উপাস্য তো মাত্র একজনই। অতএব আমাকেই ভয় কর। [ সূরা নাহল ১৬:৫১ ]
وَلَهُ مَا فِي الْسَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَهُ الدِّينُ وَاصِبًا أَفَغَيْرَ اللّهِ تَتَّقُونَ
যা কিছু নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আছে তা তাঁরই এবাদত করা শাশ্বত কর্তব্য। তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করবে? [ সূরা নাহল ১৬:৫২ ]
وَمَا بِكُم مِّن نِّعْمَةٍ فَمِنَ اللّهِ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ
তোমাদের কাছে যে সমস্ত নেয়ামত আছে, তা আল্লাহরই পক্ষ থেকে। অতঃপর তোমরা যখন দুঃখে-কষ্টে পতিত হও তখন তাঁরই নিকট কান্নাকাটি কর। [ সূরা নাহল ১৬:৫৩ ]
ثُمَّ إِذَا كَشَفَ الضُّرَّ عَنكُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِّنكُم بِرَبِّهِمْ يُشْرِكُونَ
এরপর যখন আল্লাহ তোমাদের কষ্ট দুরীভূত করে দেন, তখনই তোমাদের একদল স্বীয় পালনকর্তার সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করতে থাকে। [ সূরা নাহল ১৬:৫৪ ]
لِيَكْفُرُواْ بِمَا آتَيْنَاهُمْ فَتَمَتَّعُواْ فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ
যাতে ঐ নেয়ামত অস্বীকার করে, যা আমি তাদেরকে দিয়েছি। অতএব মজা ভোগ করে নাও-সত্বরই তোমরা জানতে পারবে। [ সূরা নাহল ১৬:৫৫ ]
وَيَجْعَلُونَ لِمَا لاَ يَعْلَمُونَ نَصِيبًا مِّمَّا رَزَقْنَاهُمْ تَاللّهِ لَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَفْتَرُونَ
তারা আমার দেয়া জীবনোপকরণ থেকে তাদের জন্যে একটি অংশ নির্ধারিত করে, যাদের কোনো খবরই তারা রাখে না। আল্লাহর কসম, তোমরা যে অপবাদ আরোপ করছ, সে সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। [ সূরা নাহল ১৬:৫৬ ]
وَيَجْعَلُونَ لِلّهِ الْبَنَاتِ سُبْحَانَهُ وَلَهُم مَّا يَشْتَهُونَ
তারা আল্লাহর জন্যে কন্যা সন্তান নির্ধারণ করে-তিনি পবিত্র মহিমান্বিত এবং নিজেদের জন্যে ওরা তাই স্থির করে যা ওরা চায়। [ সূরা নাহল ১৬:৫৭ ]
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالأُنثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ
যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। [ সূরা নাহল ১৬:৫৮ ]
يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِن سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلاَ سَاء مَا يَحْكُمُونَ
তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট। [ সূরা নাহল ১৬:৫৯ ]
لِلَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ مَثَلُ السَّوْءِ وَلِلّهِ الْمَثَلُ الأَعْلَىَ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
যারা পরকাল বিশ্বাস করে না, তাদের উদাহরণ নিকৃষ্ট এবং আল্লাহর উদাহরণই মহান, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [ সূরা নাহল ১৬:৬০ ]
وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللّهُ النَّاسَ بِظُلْمِهِم مَّا تَرَكَ عَلَيْهَا مِن دَآبَّةٍ وَلَكِن يُؤَخِّرُهُمْ إلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ لاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ
যদি আল্লাহ লোকদেরকে তাদের অন্যায় কাজের কারণে পাকড়াও করতেন, তবে ভুপৃষ্ঠে চলমান কোনো কিছুকেই ছাড়তেন না। কিন্তু তিনি প্রতিশ্রুতি সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন। অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহুর্তও বিলম্বিত কিংবা তরাম্বিত করতে পারবে না। [ সূরা নাহল ১৬:৬১ ]
وَيَجْعَلُونَ لِلّهِ مَا يَكْرَهُونَ وَتَصِفُ أَلْسِنَتُهُمُ الْكَذِبَ أَنَّ لَهُمُ الْحُسْنَى لاَ جَرَمَ أَنَّ لَهُمُ الْنَّارَ وَأَنَّهُم مُّفْرَطُونَ
যা নিজেদের মন চায় না তারই তারা আল্লাহর জন্যে সাব্যস্ত করে এবং তাদের জিহবা মিথ্যা বর্ণনা করে যে, তাদের জন্যে রয়েছে কল্যাণ। স্বতঃসিদ্ধ কথা যে, তাদের জন্যে রয়েছে আগুন এবং তাদেরকেই সর্বাগ্রে নিক্ষেপ করা হবে। [ সূরা নাহল ১৬:৬২ ]
تَاللّهِ لَقَدْ أَرْسَلْنَا إِلَى أُمَمٍ مِّن قَبْلِكَ فَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَهُوَ وَلِيُّهُمُ الْيَوْمَ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
আল্লাহর কসম, আমি আপনার পূর্বে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে রাসূল প্রেরণ করেছি, অতঃপর শয়তান তাদেরকে কর্ম সমূহ শোভনীয় করে দেখিয়েছে। আজ সেই তাদের অভিভাবক এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। [ সূরা নাহল ১৬:৬৩ ]
وَمَا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ إِلاَّ لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِي اخْتَلَفُواْ فِيهِ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আমি আপনার প্রতি এ জন্যেই গ্রন্থ নাজিল করেছি, যাতে আপনি সরল পথ প্রদর্শনের জন্যে তাদের কে পরিষ্কার বর্ণনা করে দেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে এবং ঈমানদারকে ক্ষমা করার জন্যে। [ সূরা নাহল ১৬:৬৪ ]
وَاللّهُ أَنزَلَ مِنَ الْسَّمَاء مَاء فَأَحْيَا بِهِ الأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَسْمَعُونَ
আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তদ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেছেন। নিশ্চয় এতে তাদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে, যারা শ্রবণ করে। [ সূরা নাহল ১৬:৬৫ ]
وَإِنَّ لَكُمْ فِي الأَنْعَامِ لَعِبْرَةً نُّسْقِيكُم مِّمَّا فِي بُطُونِهِ مِن بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا سَآئِغًا لِلشَّارِبِينَ
তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আমি তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থিত বস্তুসমুহের মধ্যে থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দুগ্ধ যা পানকারীদের জন্যে উপাদেয়। [ সূরা নাহল ১৬:৬৬ ]
وَمِن ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالأَعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
এবং খেজুর বৃক্ষ ও আঙ্গুর ফল থেকে তোমরা মধ্য ও উত্তম খাদ্য তৈরী করে থাক, এতে অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৬৭ ]
وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরী কর, [ সূরা নাহল ১৬:৬৮ ]
ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلاً يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৬৯ ]
وَاللّهُ خَلَقَكُمْ ثُمَّ يَتَوَفَّاكُمْ وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْ لاَ يَعْلَمَ بَعْدَ عِلْمٍ شَيْئًا إِنَّ اللّهَ عَلِيمٌ قَدِيرٌ
আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এরপর তোমাদের মৃত্যুদান করেন। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ পৌছে যায় জরাগ্রস্ত অকর্মন্য বয়সে, ফলে যা কিছু তারা জানত সে সম্পর্কে তারা সজ্ঞান থাকবে না। নিশ্চয় আল্লাহ সু-বিজ্ঞ সর্বশক্তিমান। [ সূরা নাহল ১৬:৭০ ]
وَاللّهُ فَضَّلَ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِي الْرِّزْقِ فَمَا الَّذِينَ فُضِّلُواْ بِرَآدِّي رِزْقِهِمْ عَلَى مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَهُمْ فِيهِ سَوَاء أَفَبِنِعْمَةِ اللّهِ يَجْحَدُونَ
আল্লাহ তা’আলা জীবনোপকরণে তোমাদের একজনকে অন্যজনের চাইতে শ্রেষ্টত্ব দিয়েছেন। অতএব যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে, তারা তাদের অধীনস্থ দাস-দাসীদের কে স্বীয় জীবিকা থেকে এমন কিছু দেয় না, যাতে তারা এ বিষয়ে তাদের সমান হয়ে যাবে। তবে কি তারা আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করে। [ সূরা নাহল ১৬:৭১ ]
وَاللّهُ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُم مِّنْ أَزْوَاجِكُم بَنِينَ وَحَفَدَةً وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَتِ اللّهِ هُمْ يَكْفُرُونَ
আল্লাহ তোমাদের জন্যে তোমাদেরই শ্রেণী থেকে জোড়া পয়দা করেছেন এবং তোমাদের যুগল থেকে তোমাদেরকে পুত্র ও পৌত্রাদি দিয়েছেন এবং তোমাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছেন। অতএব তারা কি মিথ্যা বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করে? [ সূরা নাহল ১৬:৭২ ]
وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللّهِ مَا لاَ يَمْلِكُ لَهُمْ رِزْقًا مِّنَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ شَيْئًا وَلاَ يَسْتَطِيعُونَ
তারা আল্লাহ ব্যতীত এমন বস্তুর ইবাদত করে, যে তাদের জন্যে ভুমন্ডল ও নভোমন্ডল থেকে সামান্য রুযী দেওয়ার ও অধিকার রাখে না এবং মুক্তি ও রাখে না। [ সূরা নাহল ১৬:৭৩ ]
فَلاَ تَضْرِبُواْ لِلّهِ الأَمْثَالَ إِنَّ اللّهَ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
অতএব, আল্লাহর কোনো সদৃশ সাব্যস্ত করো না, নিশ্চয় আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না। [ সূরা নাহল ১৬:৭৪ ]
ضَرَبَ اللّهُ مَثَلاً عَبْدًا مَّمْلُوكًا لاَّ يَقْدِرُ عَلَى شَيْءٍ وَمَن رَّزَقْنَاهُ مِنَّا رِزْقًا حَسَنًا فَهُوَ يُنفِقُ مِنْهُ سِرًّا وَجَهْرًا هَلْ يَسْتَوُونَ الْحَمْدُ لِلّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
আল্লাহ একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন, অপরের মালিকানাধীন গোলামের যে, কোনো কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন একজন যাকে আমি নিজের পক্ষ থেকে চমৎকার রুযী দিয়েছি। অতএব, সে তা থেকে ব্যয় করে গোপনে ও প্রকাশ্যে উভয়ে কি সমান হয়? সব প্রশংসা আল্লাহর, কিন্তু অনেক মানুষ জানে না। [ সূরা নাহল ১৬:৭৫ ]
وَضَرَبَ اللّهُ مَثَلاً رَّجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا أَبْكَمُ لاَ يَقْدِرُ عَلَىَ شَيْءٍ وَهُوَ كَلٌّ عَلَى مَوْلاهُ أَيْنَمَا يُوَجِّههُّ لاَ يَأْتِ بِخَيْرٍ هَلْ يَسْتَوِي هُوَ وَمَن يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَهُوَ عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আল্লাহ আরেকটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন, দু’ব্যক্তির , একজন বোবা কোনো কাজ করতে পারে না। সে মালিকের উপর বোঝা। যেদিকে তাকে পাঠায়, কোনো সঠিক কাজ করে আসে না। সে কি সমান হবে ঐ ব্যক্তির, যে ন্যায় বিচারের আদেশ করে এবং সরল পথে কায়েম রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৭৬ ]
وَلِلّهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا أَمْرُ السَّاعَةِ إِلاَّ كَلَمْحِ الْبَصَرِ أَوْ هُوَ أَقْرَبُ إِنَّ اللّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিয়ামতের ব্যাপারটি তো এমন, যেমন চোখের পলক অথবা তার চাইতেও নিকটবর্তী। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান। [ সূরা নাহল ১৬:৭৭ ]
وَاللّهُ أَخْرَجَكُم مِّن بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ لاَ تَعْلَمُونَ شَيْئًا وَجَعَلَ لَكُمُ الْسَّمْعَ وَالأَبْصَارَ وَالأَفْئِدَةَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন। তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর দিয়েছেন, যাতে তোমরা অনুগ্রহ স্বীকার কর। [ সূরা নাহল ১৬:৭৮ ]
أَلَمْ يَرَوْاْ إِلَى الطَّيْرِ مُسَخَّرَاتٍ فِي جَوِّ السَّمَاء مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلاَّ اللّهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
তারা কি উড়ন্ত পাখীকে দেখে না? এগুলো আকাশের অন্তরীক্ষে আজ্ঞাধীন রয়েছে। আল্লাহ ছাড়া কেউ এগুলোকে আগলে রাখে না। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসীদের জন্যে নিদর্শনবলী রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:৭৯ ]
وَاللّهُ جَعَلَ لَكُم مِّن بُيُوتِكُمْ سَكَنًا وَجَعَلَ لَكُم مِّن جُلُودِ الأَنْعَامِ بُيُوتًا تَسْتَخِفُّونَهَا يَوْمَ ظَعْنِكُمْ وَيَوْمَ إِقَامَتِكُمْ وَمِنْ أَصْوَافِهَا وَأَوْبَارِهَا وَأَشْعَارِهَا أَثَاثًا وَمَتَاعًا إِلَى حِينٍ
আল্লাহ করে দিয়েছেন তোমাদের গৃহকে অবস্থানের জায়গা এবং চতুস্পদ জন্তুর চামড়া দ্বারা করেছেন তোমার জন্যে তাঁবুর ব্যবস্থা। তোমরা এগুলোকে সফরকালে ও অবস্থান কালে পাও। ভেড়ার পশম, উটের বাবরি চুল ও ছাগলের লোম দ্বারা কত আসবাবপত্র ও ব্যবহারের সামগ্রী তৈরী করেছেন এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। [ সূরা নাহল ১৬:৮০ ]
وَاللّهُ جَعَلَ لَكُم مِّمَّا خَلَقَ ظِلاَلاً وَجَعَلَ لَكُم مِّنَ الْجِبَالِ أَكْنَانًا وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُم بَأْسَكُمْ كَذَلِكَ يُتِمُّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْلِمُونَ
আল্লাহ তোমাদের জন্যে সৃজিত বস্তু দ্বারা ছায়া করে দিয়েছেন এবং পাহাড় সমূহে তোমাদের জন্যে আত্ন গোপনের জায়গা করেছেন এবং তোমাদের জন্যে পোশাক তৈরী করে দিয়েছেন, যা তোমাদেরকে গ্রীষ্ম এবং বিপদের সময় রক্ষা করে। এমনিভাবে তিনি তোমাদের প্রতি স্বীয় অনুগ্রহের পূর্ণতা দান করেন, যাতে তোমরা আত্নসমর্পণ কর। [ সূরা নাহল ১৬:৮১ ]
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ الْمُبِينُ
অতঃপর যদি তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে, তবে আপনার কাজ হল সুস্পষ্ট ভাবে পৌছে দেয়া মাত্র। [ সূরা নাহল ১৬:৮২ ]
يَعْرِفُونَ نِعْمَتَ اللّهِ ثُمَّ يُنكِرُونَهَا وَأَكْثَرُهُمُ الْكَافِرُونَ
তারা আল্লাহর অনুগ্রহ চিনে, এরপর অস্বীকার করে এবং তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ। [ সূরা নাহল ১৬:৮৩ ]
وَيَوْمَ نَبْعَثُ مِن كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا ثُمَّ لاَ يُؤْذَنُ لِلَّذِينَ كَفَرُواْ وَلاَ هُمْ يُسْتَعْتَبُونَ
যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন বর্ণনাকারী দাঁড় করাব, তখন কাফেরদেরকে অনুমতি দেয়া হবে না এবং তাদের তওবা ও গ্রহণ করা হবে না। [ সূরা নাহল ১৬:৮৪ ]
وَإِذَا رَأى الَّذِينَ ظَلَمُواْ الْعَذَابَ فَلاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمْ وَلاَ هُمْ يُنظَرُونَ
যখন জালেমরা আযাব প্রত্যক্ষ করবে, তখন তাদের থেকে তা লঘু করা হবে না এবং তাদেরকে কোনো অবকাশ দেয়া হবে না। [ সূরা নাহল ১৬:৮৫ ]
وَإِذَا رَأى الَّذِينَ أَشْرَكُواْ شُرَكَاءهُمْ قَالُواْ رَبَّنَا هَـؤُلاء شُرَكَآؤُنَا الَّذِينَ كُنَّا نَدْعُوْ مِن دُونِكَ فَألْقَوْا إِلَيْهِمُ الْقَوْلَ إِنَّكُمْ لَكَاذِبُونَ
মুশরিকরা যখন ঐ সব বস্তুকে দেখবে, যেসবকে তারা আল্লাহর সাথে শরীক সাব্যস্ত করেছিল, তখন বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা এরাই তারা যারা আমাদের শেরেকীর উপাদান, তোমাকে ছেড়ে আমরা যাদেরকে ডাকতাম। তখন ওরা তাদেরকে বলবেঃ তোমরা মিথ্যাবাদী। [ সূরা নাহল ১৬:৮৬ ]
وَأَلْقَوْاْ إِلَى اللّهِ يَوْمَئِذٍ السَّلَمَ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
সেদিন তারা আল্লাহর সামনে আত্নসমর্পন করবে এবং তারা যে মিথ্যা অপবাদ দিত তা বিস্মৃত হবে। [ সূরা নাহল ১৬:৮৭ ]
الَّذِينَ كَفَرُواْ وَصَدُّواْ عَن سَبِيلِ اللّهِ زِدْنَاهُمْ عَذَابًا فَوْقَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُواْ يُفْسِدُونَ
যারা কাফের হয়েছে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে, আমি তাদেরকে আযাবের পর আযাব বাড়িয়ে দেব। কারণ, তারা অশান্তি সৃষ্টি করত। [ সূরা নাহল ১৬:৮৮ ]
وَيَوْمَ نَبْعَثُ فِي كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا عَلَيْهِم مِّنْ أَنفُسِهِمْ وَجِئْنَا بِكَ شَهِيدًا عَلَى هَـؤُلاء وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَى لِلْمُسْلِمِينَ
সেদিন প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে আমি একজন বর্ণনাকারী দাঁড় করাব তাদের বিপক্ষে তাদের মধ্য থেকেই এবং তাদের বিষয়ে আপনাকে সাক্ষী স্বরূপ উপস্থাপন করব। আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাজিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ। [ সূরা নাহল ১৬:৮৯ ]
إِنَّ اللّهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَالإِحْسَانِ وَإِيتَاء ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ এবং আত্নীয়-স্ব জনকে দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ এবং অবাধ্যতা করতে বারণ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে তোমরা স্মরণ রাখ। [ সূরা নাহল ১৬:৯০ ]
وَأَوْفُواْ بِعَهْدِ اللّهِ إِذَا عَاهَدتُّمْ وَلاَ تَنقُضُواْ الأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلاً إِنَّ اللّهَ يَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ
আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সে অঙ্গীকার পূর্ণ কর এবং পাকাপাকি কসম করার পর তা ভঙ্গ করো না, অথচ তোমরা আল্লাহকে জামিন করেছ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন। [ সূরা নাহল ১৬:৯১ ]
وَلاَ تَكُونُواْ كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِن بَعْدِ قُوَّةٍ أَنكَاثًا تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلاً بَيْنَكُمْ أَن تَكُونَ أُمَّةٌ هِيَ أَرْبَى مِنْ أُمَّةٍ إِنَّمَا يَبْلُوكُمُ اللّهُ بِهِ وَلَيُبَيِّنَنَّ لَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
তোমরা ঐ মহিলার মত হয়ো না, যে পরিশ্রমের পর কাটা সূতা টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলে, তোমরা নিজেদের কসমসমূহকে পারস্পরিক প্রবঞ্চনার বাহানা রূপে গ্রহণ কর এজন্যে যে, অন্য দল অপেক্ষা এক দল অধিক ক্ষমতাবান হয়ে যায়। এতদ্বারা তো আল্লাহ শুধু তোমাদের পরীক্ষা করেন। আল্লাহ অবশ্যই কিয়ামতের দিন প্রকাশ করে দেবেন, যে বিষয়ে তোমরা কলহ করতে। [ সূরা নাহল ১৬:৯২ ]
وَلَوْ شَاء اللّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلكِن يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে এক জাতি করে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। [ সূরা নাহল ১৬:৯৩ ]
وَلاَ تَتَّخِذُواْ أَيْمَانَكُمْ دَخَلاً بَيْنَكُمْ فَتَزِلَّ قَدَمٌ بَعْدَ ثُبُوتِهَا وَتَذُوقُواْ الْسُّوءَ بِمَا صَدَدتُّمْ عَن سَبِيلِ اللّهِ وَلَكُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
তোমরা স্বীয় কসমসমূহকে পারস্পরিক কলহ দ্বন্দ্বের বাহানা করো না। তা হলে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পা ফসকে যাবে এবং তোমরা শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করবে এ কারণে যে, তোমরা আমার পথে বাধা দান করেছ এবং তোমাদের কঠোর শাস্তি হবে। [ সূরা নাহল ১৬:৯৪ ]
وَلاَ تَشْتَرُواْ بِعَهْدِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلاً إِنَّمَا عِندَ اللّهِ هُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকারের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম তোমাদের জন্যে, যদি তোমরা জ্ঞানী হও। [ সূরা নাহল ১৬:৯৫ ]
مَا عِندَكُمْ يَنفَدُ وَمَا عِندَ اللّهِ بَاقٍ وَلَنَجْزِيَنَّ الَّذِينَ صَبَرُواْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
তোমাদের কাছে যা আছে নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে, কখনও তা শেষ হবে না। যারা সবর করে, আমি তাদেরকে প্রাপ্য প্রতিদান দেব তাদের উত্তম কর্মের প্রতিদান স্বরূপ যা তারা করত। [ সূরা নাহল ১৬:৯৬ ]
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। [ সূরা নাহল ১৬:৯৭ ]
فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
অতএব, যখন আপনি কোরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন। [ সূরা নাহল ১৬:৯৮ ]
إِنَّهُ لَيْسَ لَهُ سُلْطَانٌ عَلَى الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
তার আধিপত্য চলে না তাদের উপর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আপন পালন কর্তার উপর ভরসা রাখে। [ সূরা নাহল ১৬:৯৯ ]
إِنَّمَا سُلْطَانُهُ عَلَى الَّذِينَ يَتَوَلَّوْنَهُ وَالَّذِينَ هُم بِهِ مُشْرِكُونَ
তার আধিপত্য তো তাদের উপরই চলে, যারা তাকে বন্ধু মনে করে এবং যারা তাকে অংশীদার মানে। [ সূরা নাহল ১৬:১০০ ]
وَإِذَا بَدَّلْنَا آيَةً مَّكَانَ آيَةٍ وَاللّهُ أَعْلَمُ بِمَا يُنَزِّلُ قَالُواْ إِنَّمَا أَنتَ مُفْتَرٍ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
এবং যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি এবং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেন তিনিই সে সম্পর্কে ভাল জানেন; তখন তারা বলেঃ আপনি তো মনগড়া উক্তি করেন; বরং তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না। [ সূরা নাহল ১৬:১০১ ]
قُلْ نَزَّلَهُ رُوحُ الْقُدُسِ مِن رَّبِّكَ بِالْحَقِّ لِيُثَبِّتَ الَّذِينَ آمَنُواْ وَهُدًى وَبُشْرَى لِلْمُسْلِمِينَ
বলুন, একে পবিত্র ফেরেশতা পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিশ্চিত সত্যসহ নাজিল করেছেন, যাতে মুমিনদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এটা মুসলমানদের জন্যে পথ নির্দেশ ও সু-সংবাদ স্বরূপ। [ সূরা নাহল ১৬:১০২ ]
وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّهُمْ يَقُولُونَ إِنَّمَا يُعَلِّمُهُ بَشَرٌ لِّسَانُ الَّذِي يُلْحِدُونَ إِلَيْهِ أَعْجَمِيٌّ وَهَـذَا لِسَانٌ عَرَبِيٌّ مُّبِينٌ
আমি তো ভালভাবেই জানি যে, তারা বলেঃ তাকে জনৈক ব্যক্তি শিক্ষা দেয়। যার দিকে তারা ইঙ্গিত করে, তার ভাষা তো আরবী নয় এবং এ কোরআন পরিষ্কার আরবী ভাষায়। [ সূরা নাহল ১৬:১০৩ ]
إِنَّ الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِ اللّهِ لاَ يَهْدِيهِمُ اللّهُ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যারা আল্লাহর কথায় বিশ্বাস করে না, তাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। [ সূরা নাহল ১৬:১০৪ ]
إِنَّمَا يَفْتَرِي الْكَذِبَ الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِ اللّهِ وَأُوْلـئِكَ هُمُ الْكَاذِبُونَ
মিথ্যা কেবল তারা রচনা করে, যারা আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাস করে না এবং তারাই মিথ্যাবাদী। [ সূরা নাহল ১৬:১০৫ ]
مَن كَفَرَ بِاللّهِ مِن بَعْدِ إيمَانِهِ إِلاَّ مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالإِيمَانِ وَلَـكِن مَّن شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ বিশ্বাসী হওয়ার পর আল্লাহতে অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উম্মুক্ত করে দেয় তাদের উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে শাস্তি। [ সূরা নাহল ১৬:১০৬ ]
ذَلِكَ بِأَنَّهُمُ اسْتَحَبُّواْ الْحَيَاةَ الْدُّنْيَا عَلَى الآخِرَةِ وَأَنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
এটা এ জন্যে যে, তারা পার্থিব জীবনকে পরকালের চাইতে প্রিয় মনে করেছে এবং আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। [ সূরা নাহল ১৬:১০৭ ]
أُولَـئِكَ الَّذِينَ طَبَعَ اللّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ وَأُولَـئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ
এরাই তারা, আল্লাহ তা’য়ালা এদেরই অন্তর, কর্ণ ও চক্ষুর উপর মোহর মেরে দিয়েছেন এবং এরাই কান্ড জ্ঞানহীন। [ সূরা নাহল ১৬:১০৮ ]
لاَ جَرَمَ أَنَّهُمْ فِي الآخِرَةِ هُمُ الْخَاسِرونَ
বলাবাহুল্য পরকালে এরাই ক্ষতি গ্রস্ত হবে। [ সূরা নাহল ১৬:১০৯ ]
ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ هَاجَرُواْ مِن بَعْدِ مَا فُتِنُواْ ثُمَّ جَاهَدُواْ وَصَبَرُواْ إِنَّ رَبَّكَ مِن بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
যারা দুঃখ-কষ্ট ভোগের পর দেশত্যাগী হয়েছে অতঃপর জেহাদ করেছে, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা এসব বিষয়ের পরে অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:১১০ ]
يَوْمَ تَأْتِي كُلُّ نَفْسٍ تُجَادِلُ عَن نَّفْسِهَا وَتُوَفَّى كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি আত্ন-সমর্থনে সওয়াল জওয়াব করতে করতে আসবে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের কৃতকর্মের পূর্ণ ফল পাবে এবং তাদের উপর জুলুম করা হবে না। [ সূরা নাহল ১৬:১১১ ]
وَضَرَبَ اللّهُ مَثَلاً قَرْيَةً كَانَتْ آمِنَةً مُّطْمَئِنَّةً يَأْتِيهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِّن كُلِّ مَكَانٍ فَكَفَرَتْ بِأَنْعُمِ اللّهِ فَأَذَاقَهَا اللّهُ لِبَاسَ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ بِمَا كَانُواْ يَصْنَعُونَ
আল্লাহ দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন একটি জনপদের, যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, তথায় প্রত্যেক জায়গা থেকে আসত প্রচুর জীবনোপকরণ। অতঃপর তারা আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। তখন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের কারণে স্বাদ আস্বাদন করালেন, ক্ষুধা ও ভীতির। [ সূরা নাহল ১৬:১১২ ]
وَلَقَدْ جَاءهُمْ رَسُولٌ مِّنْهُمْ فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمُ الْعَذَابُ وَهُمْ ظَالِمُونَ
তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল আগমন করেছিলেন। অনন্তর ওরা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করল। তখন আযাব এসে তাদরকে পাকড়াও করল এবং নিশ্চিতই ওরা ছিল পাপাচারী। [ সূরা নাহল ১৬:১১৩ ]
فَكُلُواْ مِمَّا رَزَقَكُمُ اللّهُ حَلالاً طَيِّبًا وَاشْكُرُواْ نِعْمَتَ اللّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
অতএব, আল্লাহ তোমাদেরকে যেসব হালাল ও পবিত্র বস্তু দিয়েছেন, তা তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা তাঁরই এবাদতকারী হয়ে থাক। [ সূরা নাহল ১৬:১১৪ ]
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالْدَّمَ وَلَحْمَ الْخَنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّهِ بِهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَإِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা জবাই কালে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর কেউ সীমালঙ্ঘন কারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:১১৫ ]
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَـذَا حَلاَلٌ وَهَـذَا حَرَامٌ لِّتَفْتَرُواْ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ لاَ يُفْلِحُونَ
তোমাদের মুখ থেকে সাধারনতঃ যেসব মিথ্যা বের হয়ে আসে তেমনি করে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বল না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মঙ্গল হবে না। [ সূরা নাহল ১৬:১১৬ ]
مَتَاعٌ قَلِيلٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যৎসামান্য সুখ-সম্ভোগ ভোগ করে নিক। তাদের জন্যে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। [ সূরা নাহল ১৬:১১৭ ]
وَعَلَى الَّذِينَ هَادُواْ حَرَّمْنَا مَا قَصَصْنَا عَلَيْكَ مِن قَبْلُ وَمَا ظَلَمْنَاهُمْ وَلَـكِن كَانُواْ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
ইহুদীদের জন্যে আমি তো কেবল তাই হারাম করেছিলাম যা ইতিপূর্বে আপনার নিকট উল্লেখ করেছি। আমি তাদের প্রতি কোনো জুলুম করিনি, কিন্তু তারাই নিজেদের উপর জুলুম করত। [ সূরা নাহল ১৬:১১৮ ]
########
ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ عَمِلُوا السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابُوا مِن بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا إِنَّ رَبَّكَ مِن بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
অনন্তর যারা অজ্ঞতাবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, আপনার পালনকর্তা এসবের পরে তাদের জন্যে অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়ালু। [ সূরা নাহল ১৬:১১৯ ]
إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِّلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
নিশ্চয় ইব্রাহীম ছিলেন এক সম্প্রদায়ের প্রতীক, সবকিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে এক আল্লাহরই অনুগত এবং তিনি শেরককারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। [ সূরা নাহল ১৬:১২০ ]
شَاكِرًا لِّأَنْعُمِهِ ۚ اجْتَبَاهُ وَهَدَاهُ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
তিনি তাঁর অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে মনোনীত করেছিলেন এবং সরল পথে পরিচালিত করেছিলেন। [ সূরা নাহল ১৬:১২১ ]
وَآتَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً ۖ وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ
আমি তাঁকে দুনিয়াতে দান করেছি কল্যাণ এবং তিনি পরকালেও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত। [ সূরা নাহল ১৬:১২২ ]
ثُمَّ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا ۖ وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
অতঃপর আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে, ইব্রাহীমের দ্বীন অনুসরণ করুন, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন এবং শিরককারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না। [ সূরা নাহল ১৬:১২৩ ]
إِنَّمَا جُعِلَ السَّبْتُ عَلَى الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِيهِ ۚ وَإِنَّ رَبَّكَ لَيَحْكُمُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
শনিবার দিন পালন যে, নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা তাদের জন্যেই যারা এতে মতবিরোধ করেছিল। আপনার পালনকর্তা কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করত। [ সূরা নাহল ১৬:১২৪ ]
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে। [ সূরা নাহল ১৬:১২৫ ]
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ ۖ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرِينَ
আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম। [ সূরা নাহল ১৬:১২৬ ]
وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلَّا بِاللَّهِ ۚ وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُ فِي ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ
আপনি সবর করবেন। আপনার সবর আল্লাহর জন্য ব্যতীত নয়, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না এবং তাদের চক্রান্তের কারণে মন ছোট করবেন না। [ সূরা নাহল ১৬:১২৭ ]
إِنَّ اللَّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوا وَّالَّذِينَ هُم مُّحْسِنُونَ
নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন, যারা পরহেযগার এবং যারা সৎকর্ম করে। [ সূরা নাহল ১৬:১২৮ ]
চলবে…