ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে রিকশাচালকরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে দয়াগঞ্জ মোড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. ফারুক আহম্মেদ জানান, মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে রিকশাচালকরা। সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে তাদের অনুরোধ করা হয় সড়ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তবে তারা পুলিশের অনুরোধ না শুনে উল্টো পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বেলা ১টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়েছে রিকশাচালকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার এক রিট শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৩ দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বৃহত্তর ঢাকা সিটি কর্পোরেশন প্যাডেলচালিত রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি জহুরুল ইসলাম মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক মো. মমিন আলী রিটটি দায়ের করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু।
সারাদেশের মতো রাজধানীতেও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। অলি-গলিসহ মূল সড়কে এসব রিকশার দাপটে ভেঙে পড়েছে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা। অনিয়ন্ত্রিত চলাচল ও ঝুঁকিপূর্ণ বাহনটির চলাচল বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য যানবাহন চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করছে। এর একটি বড় অংশ ব্যাটারিচালিত। এছাড়া পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে।
রাজধানীর মূল সড়কের চেয়ে অলি-গলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বেশি। সুযোগ পেলে মূল সড়কেও দাপিয়ে বেড়ায় এসব রিকশা। খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, ময়নারটেক, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি।
এসব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল রয়েছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।