বরগুনার বেতাগী উপজেলায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী উপজেলার পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বেতাগী উপজেলার পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গাবুয়া নামক এলাকার হক মিয়া সিকদারের ছেলে হাসান সিকদারকে (২৩) আটক করেছে বেতাগী থানা পুলিশ।
বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলার ঘটনায় জড়িত হাসান এলাকায় বখাটে যুবক হিসেবে পরিচিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বেতাগীর পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযুক্ত হাসানের পরিবারকে বিষয়টি জানালে এবং প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্ত হাসান ক্ষিপ্ত হন। পরে আজ স্কুল চলাকালীন ক্লাস বিরতির সময়ে কয়েকজনকে নিয়ে ওই স্কুল মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলের মাঠেই ছিল। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে হাত ধরে টানাটানি শুরু করলে অন্য শিক্ষার্থীরা তা দেখে স্কুলের শিক্ষকদের খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে শিক্ষকরা উপস্থিত হলে অভিযুক্ত হাসানের সঙ্গে থাকা ধারালো একটি দেশীয় অস্ত্র (রামদা) দিয়ে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী হাতে কোপ লেগে গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশে খবর দিলে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরের দিকে স্কুলে ক্লাসের বিরতি চলছিল, আমরা শিক্ষকরা লাইব্রেরিতে বসে নাস্তা খাচ্ছিলাম। এ সময় বাইরে থেকে কিছু ছেলে দৌড়ে স্কুলের দোতলায় এসে জানায় স্কুলের এক ছাত্রীকে এক ছেলে দা হাতে তার হাত ধরে টানাটানি করেছে। খবর পেয়ে নিচে গিয়ে আমরা শিক্ষকরা বাধা দিলে এলোপাতাড়ি কোপে ওই ছাত্রী আহত হয়।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জড়িত হাসান সিকদারকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা ঢাকায় থাকেন। তিনি বরগুনার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।