
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, পবিত্র কুরআনের তাৎপর্যই হচ্ছে সমাজে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু মানব রচিত কোনো মতবাদ দিয়ে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত কেউ শতভাগ ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। মানব রচিত মতবাদ নিজেই নিজের সঙ্গে দ্বিমতে চলে যায়। আর কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিল হয়েছে। তাই এই কুরআনের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সর্বস্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। শহীদ দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী কলেজের রজনীকান্ত সেন মঞ্চে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরী শাখা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীর মাঝে পবিত্র কুরআন বিতরণ করা হয়।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, সত্যিকার অর্থে জুলাই বীর শহীদ-গাজীদের রক্তের দায় শোধ করতে চাইলে কুরআনকে ধারণ করে আগামী দিনে বাংলাদেশে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর এটি করতে পারলেই শহীদ আলী রায়হান, আবু সাঈদ, শান্ত, মুগ্ধদের আত্মা শান্তি পাবে।
তিনি বলেন, যার মধ্যেই হাসিনার চরিত্র ফুটে উঠবে, যাদের মধ্যে ফ্যাসিজম তৈরি হয়ে উঠবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে।
ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, শহীদ সাব্বির, শহীদ আইয়ুব কি অপরাধ ছিল তাদের? তারা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিল। তারা সমাজের ছাত্রদের ভালো কাজের দিকে আহ্বান করেছিল, এটাই তাদের অপরাধ? কারণ তাদের এই আহ্বানে সব ছাত্র যখন সাড়া দিচ্ছে, তাদের অপকর্ম তো আর চলে না সমাজে-ক্যাম্পাসে। এটাই হলো বাস্তবতা।
পলাতক শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, কি ছিল তাদের অপরাধ? তারা বলেছিলেন কোটা ব্যবস্থা সংশোধন করতে হবে, তাদের যথেষ্ট লজিক ছিল। কিন্তু না, মানবে না। দেশ আমার, আমার বাবার দেশ, আমার ভাইয়ের দেশ, আমার দেশ, যা ইচ্ছা তাই করবো এসব বলেছিলেন। কিন্তু দেশ তো কারও বাপের হয় না। এরপর আমাদের (আন্দোলনকারী) ওপর নির্যাতন চালালো। ওবায়দুল কাদের বললেন, সব ঠান্ডা করতে ‘ছাত্রলীগই যথেষ্ট’। আরব দেশে এক শ্রেণির মানুষ ঠিক এভাবেই এক সময় বলতেন, ‘আমাদের উদবারাই যথেষ্ট, আবু জেহেলরাই যথেষ্ট, কীসের এ সমস্ত বেলাল, সুমাইয়া, আম্মার ইবনে ইয়াসার, আবু বকর, এদের কোনো দাম নাই।’
তিনি আরো বলেন, অতীত আর বর্তমান নিয়ে বসে থাকলে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা যাবে না। তারা আমাদের নিয়ে হাসি তামাশা করেছে। অতীতেও করেছে, এখনো করে। ১৯৮২ সালে যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করে মনে করেছিল ছাত্রশিবির নিঃশেষ হয়ে গেছে, ইসলামী আন্দোলন এখন নিঃশেষ হয়ে যাবে, ইসলামের কথা বলার জন্য এখানে কোন মানুষ থাকবে না। শাহবাগ তৈরি করে তারা মনে করেছিল বাংলাদেশকে তারা গিলে খেয়ে ফেলেছে। তারা মনে করেছিল এই বাংলাদেশে ন্যায়ের পক্ষে, হকের পক্ষে কথা বলার জন্য আর কোনো মানুষ থাকবে না। কিন্তু মানুষ অবশিষ্ট ছিল, যেটা ২০২৪ এর তরুণ এই প্রজন্ম প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামীম উদ্দিনের সভাপতিত্ব সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় তথ্য ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ হোসাইন আহমেদ মেহেদী। সভা সঞ্চালনা করেন মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইমরান নাজির।