যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। দেশটির ব্যবহারকারীরা বলছেন, অ্যাপে একটি বার্তা দেখা যাচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছে— টিকটিককে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আইনটি কার্যকর হয়েছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে দেখানো বার্তায় বলা হচ্ছে, “আপনি আর টিকটক ব্যবহার করতে পারবেন না”। এতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা সৌভাগ্যবান, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন— দায়িত্ব গ্রহণের পর টিকটক পুনরায় চালুর সমস্যা সমাধানে তিনি আমাদের সাথে কাজ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সোমবার দায়িত্ব গ্রহণের পর টিকটককে ৯০ দিনের একটি সময় দিতে পারেন। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ গত বছরের মার্চে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিলটি পাস হয়। এরপর এপ্রিলে বিতর্কিত এই বিলটি অনুমোদন করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। তখন বলা হয়েছিল, এ আইনের আওতায় টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের শেয়ার আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করে দিতে হবে। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপটি ব্লক করে দেওয়া হবে।
অবশ্য টিকটক আগেই বলেছিল, যদি মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে রোববার থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্রে সেবা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। শুক্রবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে তারা এই ঘোষণা দেয়।
শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস ও বিচার বিভাগ টিকটকের জন্য প্রয়োজনীয় স্পষ্টতা ও নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা টিকটকের সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শুক্রবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছিল, টিকটকের চীনা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে রোববারের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটি বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় এটি নিষিদ্ধ হবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট টিকটকের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে। কারণ চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের তথ্য চীন সরকারের কাছে দিতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে। মার্কিন সরকার মনে করে, চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাইটড্যান্স চীনা সরকারের কাছে তথ্য সরবরাহে বাধ্য, যা মার্কিন নাগরিকদের গোপনীয়তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। অবশ্য বিশ্বের অনেক দেশেই টিকটক বন্ধ আছে। ভারত ইতোমধ্যেই টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০২০ সালের জুনে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগে দেশটি এই অ্যাপের বড় বাজার ছিল। এছাড়া ইরান, নেপাল, আফগানিস্তান এবং সোমালিয়াতেও টিকটক বন্ধ আছে। ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের সরকার ও সংসদে তাদের কর্মীদের ডিভাইসে টিকটক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।