ঢাকার পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘিরে পুরো বিচারিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। এ অবস্থায় বিডিআর আইন ফিরিয়ে আনা এবং নির্দোষ সদস্যদের বাহিনীতে যুক্ত করাসহ ৬ দফা দাবি জানান তিনি।
বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি এবং বিচার ও কমিশন বিষয়ে রোববার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচারিক ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন।
সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, আগের পুরো প্রক্রিয়াকে বয়কট করছি। কমিশন যে রিপোর্ট দেবে সে অনুযায়ী বিচার হবে। যাদের ওপর রাষ্ট্রীয় জুলুম হয়েছে রাষ্ট্র নিজ দায়িত্বে তাদের সম্মান ফিরিয়ে দেবে এবং চাকরিতে বহাল করতে হবে।
এ সময় ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় ঘোষণা করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন থাকুক। তবে প্রশ্ন হলো আজ কেন তাদের ছেড়ে দিতে হলো? ৫ আগস্টের পরে শুনানি করে ছেড়ে দেওয়া যেত না, কেন এত টালবাহানা হলো?
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার ঘিরে উত্থাপিত ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. খুনি হাসিনার ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় বাতিল করে আগামী ৩০ জানুয়ারি মধ্যে ঢালাওভাবে আটক করা বিডিআর সদস্যদের সিআরপিসি ৪০১ ধারায় মুক্তি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ হতে পারে। নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত শেষে যারা অপরাধী চিহ্নিত হবেন, তাদের পুনর্বিচার করতে হবে।
২. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নম্বর ধারা বাদ দিতে হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ষড়যন্ত্রের শিকার (জেলবন্দী কিন্তু বাইরে আছেন) দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্যদের কমিশনে যুক্ত করতে হবে।
৩. পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে শহীদ হওয়া ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সকল বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. বিজিবি আইন ২০১০ বাতিল করে পূর্বের বিডিআর আইন পুনর্বহাল করতে হবে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নামকে পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।
৬. পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে সকল শহীদদের স্মরণে জাতীয় দিবস চালু করতে হবে।