জুমার দিনটি মুমিন মুসলমানদের সমাবেশের দিন। তাই দিনটিকে ‘ইয়াওমুল জুমআ’ বলা হয়। এইদিনের বিশেষ গুরুত্ব পবিত্র কোরআনুল কারিম ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- কোরআনের ঘোষণার আলোকে জুমার নামাজ ও এদিনের ইবাদতের গুরুত্ব অনেক বেশি। আর তাই মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা জুমআ নামে একটি সূরাও নাজিল করেছেন।
সূরা জুমআ পবিত্র কোরআনুল কারিমের ৬২তম সূরা। মদিনায় অবতীর্ণ এ সূরাটিতে আল্লাহ তাআলা জুমার নামাজের অসামান্য গুরুত্ব বোঝাতে তার প্রিয় বান্দাদের আহ্বান করে বলেন, یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
অর্থ: ‘হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে’। (সূরা: জুমা. আয়াত: ৯)
পরের আয়াতে রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ ابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰهِ وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
অর্থ: ‘এরপর যখন নামাজ শেষ হবে তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় আর আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফল হতে পার’। (সূরা: জুমা, আয়াত: ১০)
জুমার দিনের গুরুত্ব ও করণীয়
> ‘আল্লাহ তাআলা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও সমস্ত জগৎকে ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয়দিনের শেষদিন ছিল জুমআর দিন’। (মুসলিম)
> ‘যে দিনগুলোতে সূৰ্য উঠে তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হচ্ছে জুমার দিন। এই দিনেই আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টি হন, এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই জন্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়। আর কেয়ামত এই দিনেই সংঘটিত হবে’। (মুসলিম)
> এই দিনে এমন একটি মুহুর্ত আছে, যাতে মানুষ যে দোয়াই করে, তাই কবুল হয়। (বুখারি, মুসলিম)
> আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে জুমা পড়তে আসা।
> জুমার নামাজের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা।
> পায়ে হেঁটে আগে আগে মসজিদে আসা।
> মসজিদে এসে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা।
> ইমামের সঙ্গে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নামাজ সম্পন্ন করা্
> সামাজিক দায়িত্ব থাকলে তা নামাজ শেষে পালন করা।
> প্রয়োজন অনুযায়ী রিজিকের সন্ধানে কাজে নেমে পড়া।
> সপ্তাহব্যাপী জামাতে আসার মনোভাব তৈরি ও সিদ্ধান্ত নেওয়া।
> পরকালের বিষয়ে চিন্তাভাবনা, গবেষণা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
> জুমার গুরুত্ব অনুধাবনের চেষ্টা করা এবং সে মতে আমল করা।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার দিন কোরআনের আমলে নিজেদের রাঙিয়ে নেওয়া। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক জুমার দিনটিকে সাজিয়ে আমল-ইবাদতে অতিবাহিত করা। জুমার দিনের গুরুত্ব উপলব্দি করে ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা পাওয়ার চেষ্টা করা।
ইয়া আল্লাহ! আমাদের সবাইকে জুমার দিনের গুরুত্ব বুঝে এদিনে আমলগুলো যথাযত ভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।