গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে এখনো সমাজের কোনো কোনো অংশ থেকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নানাভাবে আক্রমণ চলছে বলে মনে করছে সম্পাদক পরিষদ। এরই মধ্যে দেশের শীর্ষ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকির ঘটনাও ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম এবং সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ও এর মধ্য দিয়ে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
অন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ থেকে এ প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চা অক্ষুণ্ন রাখার পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির পরও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নানাভাবে আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকির ঘটনায় কয়েকটি পত্রিকা তাদের প্রধান কার্যালয়ের নিরাপত্তা চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদনও করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ্য।
সম্পাদক পরিষদ মনে করে, কোনো পত্রিকার পরিবেশিত সংবাদ বা সম্পাদকীয় নীতিমালা নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে তিনি লেখালেখির মাধ্যমে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু এভাবে হুমকি-ধমকির মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রয়াস বিগত কাঠামোর জনবিরোধী চর্চারই পুনরাবৃত্তির নামান্তর। বিবৃতিতে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে মব জাস্টিস কঠোর হস্তে দমনের আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে গত সোমবার ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সম্পাদক পরিষদের বৈঠক হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, আজকের পত্রিকা সম্পাদক ড. মো. গোলাম রহমান, ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বণিক বার্তা সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, দেশ রূপান্তর সম্পাদক মোস্তফা মামুন এবং সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম।