বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার সরকার ‘সুস্পষ্ট গণহত্যা’ চালিয়েছিল এবং শহীদ হাফিজুর রহমান শাহীনের হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারী ইমাজ উদ্দীন মন্ডল। তিনি আরও বলেন, ২০০৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সকল গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী মহানগরীর ২৬নং ওয়ার্ডের মেহেরচন্ডীর দায়রা পাক চত্বরে রাত ৯টায় স্বৈরাচার সরকারের গুম-খুন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এছাড়া সমাবেশের আগে বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল এসে দায়রা পাক চত্বরে মিলিত হতে দেখা যায়। এ সময় মেহেরচন্ডী দায়রা পাক চত্ত্বরকে শহীদ শাহীন চত্ত্বর ঘোষণা করা হয়।
জুলাই-বিপ্লব আন্দোলন নিষ্ঠুরভাবে দমনের চেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি সেক্রেটারী ইমাজ উদ্দীন মন্ডল আরও বলেন, কোনো মূল্যে গদি টিকিয়ে রাখতে হবে, এই জেদ ধরে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়। এটা ছিল সুস্পষ্ট গণহত্যা। শুধু স্থলভাগে নয়, আকাশ থেকেও গুলি চালানো হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের লাশ গুম করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়া আশুলিয়ায় ভ্যানভর্তি মানুষের মরদেহের কথা তুলে ধরেন। এই গণহত্যা যারা সংঘটিত করেছে, অবশ্যই তাদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী মহনগর জামায়াতের ২৬ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মেসবাহুল আরেফিন রকেটের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগরীর জামায়াতের সেক্রেটারী ইমাজ উদ্দীন মন্ডল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক অধ্যাপক সারওয়ার জাহান প্রিন্স, রাজশাহীর পারিলা ও বটগাছি ইউনিয়নের আমির মাওলানা গোলাম আজম ও সহকারী সেক্রেটারী হাফেজ নুরুজ্জামান; মতিহার থানা আমির মাওলানা আব্দুল হক সোহেল, মতিহার থানা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, মতিহার থানা শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যপক হুমায়ুন কবির , নগরীর ৩০নং ওয়ার্ড- এর আমির ড. আক্কাস আলী।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন নগরীর ২৬নং ওয়ার্ড সেক্রেটারী মিজানুর রহমান মিলন।
স্বৈরাচার সরকারের গুম,খুন হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডের জামায়াতে সমাবেশে নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, দেশের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা অবর্ণনীয় পুলিশী নির্যাতনের শিকার হলেও সব কিছু ভুলে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ লাইন, বিভিন্ন মন্দির ও হিন্দুদের বাড়ি পাহরাসহ লুটপাট এবং চাঁদাবাজী রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একই সাথে আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের সার্বিক দায়-দ্বায়িত্ব গ্রহনসহ আহতদেরও উপযুক্ত চিকিৎসা সেবায় যথাযথ ভাবে সহযোগীতা করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সর্বাত্বক ত্রান পৌছানোর ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরী শাখা।
বক্তারা আরও বলেন, মহানগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের মেহেরচন্ডীতে ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি হাফিজুর রহমান শাহীনকে হত্যা করা হয়েছিলো। শহীদ শাহিন হত্যার বিচার চেয়ে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান তারা।