![](https://torunmajhi.com/wp-content/uploads/2024/10/Ad-Banner-2-1024x127.jpeg)
দেশের মেডিকেল সায়েন্স শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতির জন্য গবেষণার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুল আলম। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রæয়ারি) রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সোরিয়াসিস ক্লিনিক উদ্বোধন উপলক্ষে রামেকের কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়ামে দুপুরে সোরিয়াসিস রোগীদের সচেতনতা এবং চিকিৎসায় সহজলভ্য করার জন্য একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন।
![](https://torunmajhi.com/wp-content/uploads/2024/10/Ad-Banner-3-1024x127.jpeg)
দীর্ঘ মেয়াদি চর্ম ও অবহেলিত সোরিয়াসিস রোগীদের চিকিৎসায় প্রধান অতিথি আরও বলেন, বিশ্বে ৫৬টি দেশ বিভিন্ন রোগ নিয়ে বিপদ সীমার নিচে রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ অন্যতম। সোরিয়াসিস কেবল ত্বকের রোগ নয়, এটি মাঝেমধ্যে ফ্লেয়ার বা জ্বালা করতে পারে, যখন সারা শরীর পুঁজ ভরা দানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়, আর প্রদাহজনিত কারণে জ্বর আসে। এক্সফোলিয়েটিভ ডারমাটাইটিস নামে ভয়ানক প্রদাহ হতে পারে, যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার দরকার হয়। আবার কারও কারও এ থেকে সন্ধি আক্রান্ত হতে পারে, যাকে সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস বলা হয়। এ ধরনের আর্থ্রাইটিসে হাতের সন্ধিগুলো বাঁকা ও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সোরিয়াসিসের শুরু থেকেই সঠিক চিকিৎসা জরুরি। সোরিয়াসিস রোগ এবং এর চিকিৎসা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আক্রান্ত করতে পারে। চর্মের পাশাপাশি অস্থি ও অস্থি সন্ধিসহ আরো নানাবিধ জটিলতা তৈরি করতে পারে এই রোগ। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থাপনা ও ফলোআপ এবং জনসচেতনতা খুবই জরুরী এ রোগের ব্যবস্থাপনায়।
উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুল আলম বলেন, আমাদের দেশে চিকিৎসকেরা প্রায় ২০০জন করে রোগী দেখতে হয়। এত অব্যবস্থাপনা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়েও চিকিৎসকদের জনগণের কল্যাণে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মত্যাগে নতুন স্বাধীনতায় জনগণের চাহিদা পূরণ করতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়বো, যেখানে কোন বৈষম্য থাকবে না। আল্লাহ আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. জাওয়াদুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ খন্দকার মোঃ ফয়সল আলম, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জহিরুল হক, ডারমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মশিউর রহমান এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ লায়লা শামীমা শারমিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে দেশের অন্যান্য মেডিকেলের চেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ১নং র্যাঙ্কিং অর্জন করেছে। সেবা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সব সময় কড়া নজরে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সমাপনি বক্তব্য উপাচার্য অধ্যাপক ডা. জাওয়াদুল হক বলেন, সোরিয়াসিস থাকলে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। ধূমপান একেবারেই বর্জন করতে হবে। সচেতনতা এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন সোরিয়াসিস রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে । তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ২ থেকে ৩ শতাংশ মানুষ সোরিয়াসিসে আক্রান্ত। এই রোগ সেরে যায় না কিন্তু চিকিৎসা নিলে সারা জীবন সুস্থ থাকা যায়। সোরিয়াসিস হলে সুস্থ সুশৃঙ্খল জীবনযাপন জরুরি। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, আদর্শ ওজন বজায় রাখার পরামর্শও দেন তিনি।
উল্লেখ্য সোরিয়াসিস এওয়ারনেস ক্লাবের উদ্যেগে সকল মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌন বিভাগের আওতায় সোরিয়াসিস ক্লিনিক এর কার্যক্রম চলমান। ঢাকা মেডিকেল, পাবনা, বগুড়া, মুগদা মেডিকেল, সিলেটের রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মত রাজশাহী মেডিকেলও আজকে সোরিয়াসিস বিশেষায়িত ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হলো। সোরিয়াসিস ক্লিনিকের এই উদ্যোগেকে স্বাগত জানিয়ে রামেক ডিরেক্টর, ভিসি সকলে সোরিয়াসিসের আধুনিক চিকিৎসায় আশাবাদসহ যেকোন ধরনের সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বস্ত প্রদান করে।