রাজশাহী মহানগরীতে এক নারী উদ্দ্যোক্তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ প্রতারণা ও বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণ মামলায় গোলাম জাকির হোসেন বিটন (৪৭) নামের এক প্রতারক ও ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার বাদী সাইকা খাতুন শিল্পী (৪১), তিনি বোয়ালিয়া থানার কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
গ্রেফতার ধর্ষক গোলাম জাকির হোসেন বিটন, তিনি মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার আলুপট্টি এলাকার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে। এছাড়াও বিটন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সাবেক সচিব।
শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার আলুপট্রি বিসমিল্লাহ টাওয়ারের ৪র্থ তলার ভাড়াকরা ফ্ল্যাট থেকে তাকে গ্রেফতার করে মতিহার থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আশিক ও সঙ্গীয় ফোর্স।
মামলার বরাত দিয়ে জানা যায়, পরিচয়ের শুরুতেই রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সদস্য পদ পাইয়ে দিবে বলে শিল্পীকে কথা দেয় বিটন। পরে স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সদস্য পদ পাইয়ে দেয় ধর্ষক বিটন। যার মেম্বার নং ২৫৭। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে শিল্পীর আস্থা অর্জন করে বিটন এবং উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
বিটনের স্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ্য বলে তার দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলেও জানায় শিল্পীকে। শিল্পী তাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করতে থাকে। একপর্যায়ে শিল্পীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় বিটন। তবে শর্ত দেয় সাময়িকভাবে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে হবে। পরে সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান করবে বলেও আশ্বাস দেয়। ২০২২ সালে পিএইচডি করার জন্য মালয়শিয়া যায় বিটন। শিল্পীকে বলে বাংলাদেশে ফিরে তোমাকে বিয়ে করবো। এরই মধ্যে ২০২১ সাল থেকে তাদের উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পকের গভীরতায় বিভিন্ন হোটেলে এবং বিটনের ভাড়াকরা বাড়িতে নিয়ে উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকলেও আজ আবদি বিব্হা করেনি প্রতারক বিটন।
সাইকা খাতুন শিল্পী জানায়, আমার সরলতার ও দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে কৌশলে বিটন আমাকে প্রায় ৩ বছর বিভিন্ন হোটেলে ও বাড়ি ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তার যৌন কামনা পূরুণ করেন। আমি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিভিন্ন প্রকার তাল-বাহানা করতে থাকে এবং আমার সাথে সম্পর্কের ইতি টানে। তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক থাকাকালীন সময় বিভিন্ন সময় বিটন আমার কাছ থেকে ৭লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রতরণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। যার প্রমানাদি আমার কাছে রয়েছে বলেও জানায় ভুক্তভোগী নারী উদ্দ্যোক্তা শিল্পী।
থানায় গিয়ে ধর্ষক গোলাম জাকির হোসেন বিটনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের একটি প্রোগামে ঢাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে জমজম নামের একটি হোটেলে উঠেছিলাম। মেলামেশার বিষয় এবং অন্তরঙ্গ ছবি ঢাকার কলাবাগান থানার হোটেল গ্রান্ড সেলিমে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অবস্থানকালে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোন প্রশ্নের উত্তর দেননি। চুপ ছিলেন।
শনিবার ধর্ষণ মামলার আসামী মোঃ গোলাম জাকির হোসেন বিটনের গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মহানগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক।
তিনি জানান, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষনের অভিযোগে ভুক্তভোগী সাইকা খাতুন শিল্পী বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৪/২৩০, তাং-০৫/১২/২০২৪। ওই মামলায় শুক্রবার রাতে গোলাম জাকির হোসেন বিটনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে তাকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।