আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত ৪৬ জনের মধ্যে প্রথমবারের মতো আগামীকাল ১৪ জনকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, আসামি হাজির হলে তার সাথে একজন আইনজীবী ও স্বজন উপস্থিত থাকতে পারবে। তবে সেখানে কোনো সাধারণ মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, কোর্ট বিল্ডিংকে নতুন করে ব্যবহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন ইন্টারনেট ও কম্পিউটার সংযোগ বাকি আছে তাই আগামীকালের কার্যক্রম এখানে হবে না।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, যে ৪৬ জনের বিরুদ্ধে প্রথমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল তারা আদালতে হাজির হবেন তাদের পক্ষে আইনজীবী থাকলে তারাও হাজির হবেন। আর তদন্ত সংস্থার থেকে তদন্ত রিপোর্ট যেহেতু এক মাসের মধ্যে দেয়া সম্ভব নয় তাই সময় বাড়িয়ে দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার যেসব তদন্ত রিপোর্ট রয়েছে সেগুলোর কপি ইতোমধ্যেই পাওয়া গেছে। যারা হাজির হবেন এই কপি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অভিযোগ এবং অকাট্য দলিল দুটোই রয়েছে সেগুলোকে একসাথে করে বিচারোপযোগী করার যে প্রক্রিয়া চলছে এবং তা আইনের নির্ধারিত গতি অনুযায়ী চলবে।
তিনি আরও জানান, অতীতে এই ট্রাইব্যুনাল যে অবিচারের ইতিহাস তৈরি করেছে তা আর এই ট্রাইব্যুনাল করবে না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য যা যা করা দরকার তা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। এর জন্য আইন এবং বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন রয়েছে সেসব করা হচ্ছে। এই সরকারের সুবিচার করার সদিচ্ছা আছে। পূর্ববর্তী সময়ে গুম, খুন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচারও এই ট্রাইব্যুনালে হবে। তবে এখন জুলাই-আগস্টে চলমান গণহত্যার বিচারকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে
নিম্ন আদালতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এই আদালতেও পুনরাবৃত্তি হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসতে পারবেন। যথাযথ আইডি কার্ড ছাড়া সাংবাদিকরাও প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে আদালতে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো সাধারণ মানুষকেও আদালতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।