আবারও উন্মত্ত আততায়ী হামলার শিকার হতে হলো চীনের আমজনতাকে। এবারের ঘটনাস্থল চীনের উক্সি শহর। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সেখানে ২১ বছর বয়সি এক শিক্ষার্থী হঠাৎই ধারালো অস্ত্র নিয়ে আশপাশের লোকজনকে কোপাতে শুরু করেন! সেই ঘটনায় কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও ১৭ জন।
স্থানীয় ইয়িক্সিং নগর পুলিশের তরফে এএফপি জানিয়েছে, চীনের জিয়াংসু প্রদেশের উক্সি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড টেকনোলজিতে শনিবার সন্ধ্যার সময় এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসন।
তারা জানিয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ২১ বছরের এক ছাত্র। তিনি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষার্থী। এ বছর তার স্নাতক হওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেই পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি।
পুলিশের দাবি, ওই যুবক স্বীকার করেছেন যে- তিনি তার ক্ষোভ প্রকাশ করতেই এই কাণ্ড ঘটান এবং এই হামলা চালাবেন বলেই স্কুলে ফিরে আসেন তিনি!
পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা সেবা দিতে এবং হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে সংশ্লিষ্ট জরুরি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছে।
গত কয়েক মাসে চীনে বারবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগেই দক্ষিণাঞ্চলীয় ঝুহাই শহরে ৬২ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ জনতার ভিড় লক্ষ করে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে দেন! সেই ভয়াবহ ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হন।
পরবর্তীতে জানা যায়, ওই ব্যক্তির পারিবারিক নাম ফ্যান। এএফপি-র এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই ঘাতক চালক হতাশাগ্রস্ত হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন!
সূত্রের দাবি, বিবাহবিচ্ছেদের পর সম্পত্তির বণ্টন নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি! সেই কারণেই নাকি ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যার সিদ্ধান্ত নেন!
চেন নামে সেই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, যে স্টেডিয়ামের বাইরে এই ঘটনা ঘটে, তার বাইরে একটি রাস্তা রয়েছে। সেখানে প্রতিদিনই বহু মানুষ হাঁটতে আসেন। চেন নিজেও তাই করেন।
গত সোমবার তিনি যখন তার হাঁটার তৃতীয় ল্যাপ শেষ করতে চলেছেন, সেই সময় হঠাৎই একটি গাড়ি তাদের দিকে ছুটে আসে! সেই গাড়ি পর পর বহু মানুষকে পিষে, ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায়। কিন্তু কোনোক্রমে একপাশে ঝাঁপিয়ে পড়তে সক্ষম হন চেন। এতে তিনি প্রাণে বেঁচে যান!
সোমবারের সেই ভয়াবহ ঘটনার পর মঙ্গলবার স্থানীয় পুলিশের তরফে জানানো হয়, ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত ফ্যানের গাড়িটি আটকানো হয়। কিন্তু পুলিশের বাধা পেতেই ওই ব্যক্তি গাড়িতে বসে নিজেই নিজেকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে শুরু করেন!
তিনি নিজেই নিজের ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করেন। এরপর ফ্যানকে পাকড়াও করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে গুরুতর আঘাত ও রক্তক্ষরণের জেরে তিনি কোমায় চলে যান। যার ফলে পুলিশ তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস