২২ গজে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ আইসিসির স্বস্তির কারণ হলেও এই দু’দলের মাঠের বাইরের দ্বন্দ্ব রীতিমতো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কাছে। অনেকটা শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থান আইসিসির জন্য। আর সেটি আরও প্রকট হয়েছে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে। পাকিস্তানে খেলতে যাবে না ভারত, এমন সিদ্ধান্ত স্পষ্ট হওয়ার পর এবার কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডেইলি টাইমস জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজনে আইসিসি ব্যর্থ হলে সব ধরণের চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি আছে সম্প্রচার ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানগুলোর।
ভারতের এমন সিদ্ধন্তের বিপরীতে বিকল্প হাইব্রিড মডেলেও সায় মেলেনি পিসিবির। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি তাদের সিদ্ধান্তে স্থির থাকে, তবে ভবিষ্যতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের বিবেচনাও করছে তারা। আর তাতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে আইসিসি।
এক্ষেত্রে কারণটাও অজানা নয়। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হলে বৈশ্বিক ইভেন্টে আগ্রহ হারাবে দর্শক। আর্থিক ক্ষতি বিবেচনায় মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে সম্প্রচারকারী ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান। তাতে বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাবে আইসিসি। কারণ এই দুই খাত থেকে সংস্থাটির আয় সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ থেকে ২০২৭ চক্রে সম্প্রচারস্বত্ব থেকে আয় হবে ৩.২ বিলিয়ন ডলার। আর পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাত থেকে আয় হবে আরও ১ বিলিয়ন ডলার।
বড় এই আয়ের উৎস নি:সন্দেহে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। এটি নিশ্চিত করতে আইসিসির সব ইভেন্টে এখন একই গ্রুপে রাখা হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশকে যাতে নিশ্চিতভাবে টুর্নামেন্টে তাদের এটি ম্যাচ হয়।
সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুধুমাত্র ভারতীয় টিভি চ্যানেলে দু’দলের হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখেছেন প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি দর্শক। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সেই অঙ্ক ছিলো সাড়ে ২২ কোটি। ২০২১ টি-বিশ্বকাপেও ছিলো একই চিত্র। সেবার ভারতের ১৬৭ মিলিয়ন দর্শক ১৫.৯ বিলিয়ন মিনিট সময় ব্যয় করেছে সুপার ক্লাসিক এই লড়াই দেখতে।
আগামী সাত বছরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসির বড় চার ইভেন্ট। যারমধ্যে ২০২৫ সালে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। পাকিস্তান সত্যিই যদি তাদের দল ভারতে না পাঠায় তাহলে নি:সন্দেহে জৌলুশ হারাবে এসব আসর। বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে আইসিসি।