জামায়াতে ইসলামীর পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ড, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে জামায়াত নির্বাচন করবে। এখন থেকে সব তৎপরতা হবে মাঠ পর্যায়ে। কোনো একটা জায়গা বাদ যাবে না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পলিটিক্যাল, নন-পলিটিক্যাল সবার কাছে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় শহরের নগুয়া এলাকায় আল-ফারুক ট্রাস্ট মিলনায়তনে কিশোরগঞ্জ জেলা আমিরের শপথগ্রহণ ও সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনে এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন জোট হবে কি হবে না এই প্রশ্ন আপনাদের মাথায় মধ্যে থাকার কোনো দরকার নেই। জোট আলাদা জিনিস। আমরা যদি দেখি জোটবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের উপকার হবে আমরা যাব, তা না হলে যাব না। ইসলামের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে দুনিয়ার স্বার্থকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী কোনো কাজ করবে না।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্রই জামায়াতে ইসলামী একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদি জামায়াত এক বছর সময় পায় বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম থাকবে না যে গ্রামে জামায়াতের সংগঠন হবে না। এ ভয়টাই অনেকে পাচ্ছে। সব গ্রামে যদি জামায়াতের সংগঠন দাঁড়িয়ে যায় তখন জামায়াত হয়ে যাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রতিরোধ্য সংগঠন। সুতরাং তারা চাইছে তাড়াতাড়ি নির্বাচন হয়ে যাক, ক্ষমতায় আসবে তারা। এই সব দিবাস্বপ্ন নিয়ে উনারা একটু থাকুক। আমরা আমাদের কাজ করতে থাকি।
তিনি তার বক্তব্য আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আগামী দিনে ভারতের আধিপত্যবাদ মোকাবিলার একমাত্র শক্তি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকেই বেছে নেবে। বিএনপি মনে করেছিল ভারত তাদের ক্ষমতায় বসাবে। আসলে তারা এখন কিছুটা হতাশ হয়েছে। উনারা একবার ভারতকে খুশি করে, একবার চীনকে, আরেকবার আমেরিকাকে খুশি করে। তিনজনকে তো খুশি করা মুশকিল।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের আলাদা কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আমাদের সম্পর্ক থাকবে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে। বাংলাদেশ কোনো রাষ্ট্রের প্রতি আকৃষ্ট হবে না। আমাদের স্বার্থ হলো ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থ। যেই দেশ আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে আসবে, যে দেশ সর্বোচ্চ প্রফিট দেবে আমরা সেই দেশকেই সুযোগ দেব। সেক্ষেত্রে চীন, জাপান, হিন্দুস্থান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান বুঝি না। আমাদের দরকার দেশের ১৮ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক স্বার্থ। পৃথিবীর কোনো দেশ আমাদের রাজনৈতিক পিতৃপুরুষ নয়। রাজনৈতিক মুরুব্বি নয়। আমাদের রাজনৈতিক মুরুব্বি হচ্ছেন আল্লাহ। আমাদের নেতা বিশ্বনবী।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের টিম সদস্য মাওলানা এনামুল হক, সাবেক জেলা আমির মাওলানা তৈয়বুজ্জামান, জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আজিজুল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ৬০০ নারী-পুরুষ সদস্য (রুকন) উপস্থিত ছিলেন।